নিজস্ব প্রতিবেদন : এই প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমেরিকার শাসন ক্ষমতার সর্বোচ্চ করিডরে পৌঁছে গেলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। আফ্রো ও ভারতীয় পরিচয়ের কমলা হ্যারিস হবেন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট। আমেরিকার রাজনীতিতে আফ্রিকান বংশোদ্ভূতরা এখন প্রধানতম নির্ধারক। কমলা হ্যারিসের আফ্রিকান পরিচিত তাকে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
কমলা হ্যারিসের জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ার ওকল্যান্ডে ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর। বাবা আফ্রিকান আমেরিকান ডোনাল্ড হ্যারিস, মা ভারতীয় শ্যামলা গোপালন। ধর্মে তিনি ব্যাপিটিস্ট খ্রীস্টান। তিনি বিবাহিত ও দুই সন্তানের সৎ মা। আইন নিয়ে স্নাতক হন হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি ওফ ক্যালিফোর্নিয়ার আইন হেস্টিংস কলেজ থেকে। এরপর তিনি কর্মজীবন শুরু করেন আলমেডা কাউন্টি ডিস্ট্রিক অ্যাটরনি ডিস্ট্রিক অফিস থেকে।
২০১৬ সালে তিনি আমেরিকার পার্লামেন্টে ডেমোক্রেটিক সেনেটর বা সাংসদ হিসাবে প্রবেশ করেন। যা আমেরিকার রাজনীতিতে ইতিহাসে এক অন্যতম ঘটনা। কারণ তিনি দ্বিতীয় আফ্রিকান-আমেরিকান হিসাবে ও প্রথম এশিয়-আমেরিকান হিসাবে আমেরিকার পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন। এছাড়াও তিনি হচ্ছেন দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট যার সঙ্গে ইউরোপের কোন যোগ নেই। এশিয়া ও আফ্রিকার সঙ্গে তাঁর যোগ সামনের দিনে এই দুই মহাদেশের রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।
ডেমোক্রাট সেনেটর হিসাবে আমেরিকার রাজনীতিতে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি স্বাস্থ্য বিমার সংস্কারের দাবী, অভিবাসীদের ডকুমেন্ট ছাড়া আমেরিকার নাগরিকত্ব দেওয়া, ড্রিম অ্যাক্ট, অস্ত্র সংরক্ষণ আইন, প্রগেসিভ ট্যাক্স সংস্কারের মতো বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এর ফলে তিনি আমেরিকার সমাজে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
এছাড়াও ফেসবুকের জুকারবার্গের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য ভুলভাবে ব্যবহার ও ব্যক্তিগত নীতির ভুল ব্যবহারের বিরুদ্ধে। এর জন্য তিনি আমেরিকা সহ বিশ্বজুড়ে সমর্থন লাভ করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর কমলা হ্যারিস তাঁর প্রথম বক্তব্যে জানান, “আমার এখানে পৌঁছানোর পিছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি আমার মা শ্যামলা গোপালন হ্যারিস। ভারত থেকে ১৯ বছর বয়সে তিনি আমেরিকা আসেন এবং স্বপ্নেও কল্পনা করেননি আমার এই মুহূর্তের জন্য। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করতেন আমেরিকায় এতটা উচ্চতায় পৌঁছানোর সম্ভবনা আছে।”
ভারতে কমলা হ্যারসের এই সাফল্যে খুশির হাওয়া বইছে। যদিও ডেমোক্রাট হিসাবে কাশ্মীর নিয়ে তাঁর অভিমত ভারত সরকারকে কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে রেখেছে। তাই বিডেন ও কমলা হ্যারিসকে নিয়ে সাবধানে এগোতে চাইছে ভারত সরকার।