নিজস্ব প্রতিবেদন : কেন্দ্রে সরকারে আসার আগে বিজেপি তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যা যা প্রকাশ করেছিল সেগুলিকেই ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। ইশতেহারে থাকা ৩৭০ ধারা ইতিমধ্যেই বিলোপ হয়েছে। নিষিদ্ধ হয়েছে তিন তালাক প্রথা। আর এবার তারা ‘এক দেশ এক ভোট’ (One Nation, One Vote) এই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সংবিধান সংশোধন করে দেশে একটিই ভোটার তালিকা তৈরীর পরিকল্পনা কার্যকর করতে একপ্রস্থ আলোচনা হয়ে গেছে। স্বাধীনতা দিবসের আগেই প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের এই আলোচনায় একাধিক পথের দিশা দেখিয়েছেন সরকারি আমলারা। আর এসব দেখে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন খুব তাড়াতাড়ি লক্ষ্য পূরণের দিকে ঝাঁপাবে কেন্দ্র।
কিভাবে বাস্তবায়িত হবে এই পরিকল্পনা?
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পি.কে. মিশ্র দুটি বিকল্প পথের হদিশ দিয়েছেন। প্রথম পথ হিসাবে বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ২৪৩ (কে) ধারা এবং সংবিধানের ২৪৩ (জেড) (এ) ধারার সংশোধন করে দেশের সমস্ত নির্বাচনের জন্য একটি ভোটার তালিকা বাধ্যতামূলক করা। এই দুটি ধারায় যথাক্রমে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত উল্লেখ রয়েছে।
দ্বিতীয় পথ হল রাজ্য সরকারগুলিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইন করতে বলা। যাতে রাজ্যগুলি নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকাই পঞ্চায়েত এবং পৌরসভা ভোটের জন্য গ্রহণ করে থাকে।
এক দেশ এক ভোটের সুবিধা
দেশে ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রথা চালু হলে যে সকল সুবিধা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন তা হল একসঙ্গে ভোট হয়ে গেলে খরচ অনেকটাই কমবে। এর সাথে সাথে গোটা দেশে একসাথে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কখনো এই রাজ্যে আবার কখনো ওই রাজ্যে নির্বাচন হয়ে থাকে, যে কারণে আদর্শ নির্বাচনবিধি চলাকালীন কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের ঘোষণায় বাধার সৃষ্টি হয়।
এক দেশ এক ভোট প্রথা চালু হলে অসুবিধা
দেশে ‘এক দেশ এক ভোট’ প্রথা চালু হলে আঞ্চলিক দলগুলি অসুবিধায় পড়বে বলে মতামত পোষণ করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক দলগুলি বিপুল সুবিধা পাবে। আরও একটি সমস্যা তৈরি হবে, যেটি হল নির্দিষ্ট সময়ের আগে যদি কোন সরকার পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে বিধান পরিষদও সমস্যায় পড়বে। এর পাশাপাশি ‘এক দেশ এক ভোট’ চালু হলে দ্বিগুণ ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিন লাগবে।
প্রসঙ্গত ভারতে এক দেশ এক ভোটকে বাস্তবায়িত করার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে তা কিন্তু এই প্রথম নয়। দেশে এর আগে দুবার একসাথে বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। দেশে প্রথম ১৯৫২ সালে একসাথে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন হয়। ঠিক একইভাবে দ্বিতীয়বার একসাথে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন হয় ১৯৫৭ সালে।