নিজস্ব প্রতিবেদন : এক ঝলক দেখলে মনে হবে ৫০ টাকার নোট। কিন্তু তা নয়। এই নোটটি হলো শূন্য (০) টাকার নোট। নকশা, রঙ সব হুবহু হলেও এই টাকার কোন মূল্য নেই। আবার এই নোট লোক ঠকানোর নোট হলেও তা একেবারেই খেলনার বিষয় নয়। এই নোটের ব্যবহার করা হয়ে থাকে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে।
এমন অদ্ভুত নোট হয়তো এখনো আপনার হাতে আসেনি। তবে এই নোটের বিষয়ে জানার পর আপনি হয়তো তা হাতে পেতে উদগ্রীব হবেন। কিন্তু এখানেও বলে রাখা ভালো, এই নোট আপনার হাতে না আসায় ভাল। কারণ এই নোট কোনো শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া যায় না, এই নোটের মাধ্যমে পাওয়া যায় ঘুষ। এই ধরনের নোট বানানোর উদ্দেশ্য হলো, যারা ঘুষ নেন তাদের লজ্জায় ফেলা।
এমন অদ্ভুত ধরণের নোট অবশ্যই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তৈরি করেনি। এই ধরনের নোট তৈরি করেছিল পঞ্চম পিলার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই সংস্থা ২০০৭ সালে এই ধরনের নোট তৈরি করে। ঘুষ দেওয়া নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রচারের ক্ষেত্রে এই সংস্থার হাতিয়ার হল এই নোট। নোট প্রস্তুতকারী এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হল দক্ষিণ ভারতের।
সরকারি বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি রুখতে এবং ঘুষ দেওয়া নেওয়ার বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই নোট তৈরি করার পাশাপাশি তারা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই নোট নিয়েই প্রচার চালায়। প্রথম বছর অন্ততপক্ষে ২৫ হাজার এই ধরনের নোট ছাপানো হয়। পরে অর্থাৎ বর্তমানে এই নোটের সংখ্যা কমপক্ষে ২৫ লক্ষ। এই সকল নোট দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে।
সাধারণ নোটের থেকে এই নোটের যেসকল পার্থক্য রয়েছে সেগুলি হল, ৫০ টাকার নোট অথবা যেকোনো আসল নোটে লেখা থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। সেই জায়গায় এই জিরো রুপি নোটে লেখা রয়েছে, ‘এলিমিনেট করাপশন অ্যাট অল লেভেল’। এর অর্থ হল সমাজের সমস্ত স্তরের দুর্নীতি দূর করুন। এই নোটের বিষয়ে প্রথম ভাবনা আসে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সতীন্দ্রমোহন ভগবত নামে পদার্থবিদ্যার এক শিক্ষকের। তিনিই প্রথম ২০০১ সালে এই নোটের কথা বলেছিলেন। এর ৬ বছর পর পঞ্চম পিলার নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তার ভাবনাকে বাস্তবায়ন করে।