U-18 ID Women Cricket: টালির ঘর থেকে ক্রিকেট দুনিয়া! স্পিনের জাদুতে নজর কাড়লেন হুগলির কোয়েল

নিজস্ব প্রতিবেদন : ইচ্ছেটাই সবকিছু। বারবার এই কথাটিই প্রমাণিত হয়েছে হাজার হাজার হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা প্রতিষ্ঠিতদের হাত ধরে। তারাই হাজার কষ্ট, হাজার অভাব অনটনকে দূর করে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন। ঠিক একইভাবে এই বিষয়টিকেই প্রমাণ করতে চলেছেন বছর ১৫-র কোয়েল (Koyel)। যিনি এই মুহূর্তে সিএবি আয়োজিত আন্ত:জেলা অনূর্ধ্ব ১৮ মহিলা ক্রিকেটে (U-18 Inter-district Women Cricket) হুগলির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন।

সিউড়িতে চলছে অনূর্ধ্ব ১৮ আন্তজেলা মহিলা ক্রিকেটের দ্বিতীয় পর্যায়ের খেলা। সেখানেই হুগলির হয়ে খেলতে নেমে রীতিমতো নজর কাড়তে দেখা যায় কোয়েলকে। এই পর্যায়ের খেলাতে কোয়েলের বোলিংয়ের সামনে সব সময় সতর্ক থাকতে হচ্ছে সফল ব্যাটারদের। তার স্পিনের জাদুতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে বিপক্ষ দলের ব্যাট হাতে মাঠে নামা খেলোয়াড়দের। কৃপণ বোলারের নিরিখে ইতিমধ্যেই তিনি নজর কেড়েছেন সিএবি নির্বাচকদের।

কোয়েল গত বছর অনূর্ধ্ব ১৫ বাংলা দলে জায়গা করে দেওয়ার দৌড়ে থাকলেও তা অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়। তবে এরপরেও তিনি হতাশ হননি, বরং তিনি এগিয়ে চলেছেন অনূর্ধ্ব ১৮ বাংলা দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য। আর এই জায়গা করে নেওয়ার জন্য সমস্ত রকম অভাব অভিযোগকে দূরে সরিয়ে, দিনরাত এক করে কষ্ট করে এগিয়ে চলেছেন লক্ষ্যের দিকে। আশা করছেন তিনি আগামী দিনে নিজের ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়ে বাংলা দলে জায়গা করে নিতে পারবেন।

আরও পড়ুন 👉 ICC Test Ranking: বাবরের অহঙ্কার ভেঙে দিলেন কোহলি! টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে সুখবর পেলেন রোহিতও

হুগলির কোয়েল যেভাবে দিনরাত কষ্ট করে খেলার দুনিয়ায় পা রেখেছেন তা জানলে আপনারও মন ভারাক্রান্ত হবে। কোয়েলের বাড়ি হুগলির কৃষ্ণচরবাটি গ্রামে। তাদের সংসার চলে কেবলমাত্র চার বিঘা জমির চাষবাসের উপর। তার বাবা অসুস্থ হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন আর এমন অবস্থায় মা দিনরাত পরিশ্রম করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরিবারের অন্ন জোগাচ্ছেন। কোয়েলের দাদা সংসারের অভাবের কারণে একটি আচারের দোকানে কাজ নিয়ে মেলায় মেলায় ঘুরে বেড়ান। ছোট্ট একটি টিনের বাড়িতে পুরো পরিবার বসবাস করেও সকল অভাবের মধ্যেও কোয়েল কোনভাবেই পিছু পা হননি। বরং এগিয়ে চলেছেন নিজের লক্ষ্যে।

কোয়েল যেখানে থাকেন সেখান থেকে তাকে গুপ্তিপাড়া আসতে হয় সপ্তাহে চারদিন প্র্যাকটিস করার জন্য। এর জন্য তিনি ছয় কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে আসেন। বাকি তিন দিন তিনি ছুটে যান চুঁচুড়ায়। গুপ্তিপাড়া থেকে চুঁচুড়ার দূরত্ব অন্ততপক্ষে এক ঘন্টা। এসব কিছুকে দূর করেই কোয়েল নিজের প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বাংলা দলে জায়গা করে নেওয়ার জন্য সমস্ত রকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। কোয়েলের পরিবারের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ভালো-মন্দ খাওয়া দাওয়া তার কাছে দিবাস্বপ্ন। এছাড়াও বাড়ির কাজকর্মও তাকে করতে হয়। কাপড় কাচা থেকে শুরু করে বাসন মাজা, ভাতের হাঁড়ি চাপিয়ে তারপরেই কোয়েলকে রওনা দিতে হয় মাঠে।