লাল্টু : পৌরাণিক ও ঐতিহ্যবাহী পটশিল্প, যা আস্তে আস্তে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সেই শিল্পকে তুলে ধরে এই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষদের সচেতন করার ছোট্ট প্রয়াস প্রচেষ্টা নামক এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার। দুবরাজপুর শহরের কয়েকটি দেওয়ালে এখানে তারা তিন ধরনের ছবিকে তুলে ধরে মানুষদের সচেতন করার চেষ্টায়।
আদি অনন্ত কাল ধরে দেবী দূর্গা অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে আসছেন তাঁর দশভূজা দিয়ে। সেই দশভূজায় মায়ের দশ রকম অস্ত্র থাকে আর অসুরকে বধ করেন। যেহেতু সামনেই দূর্গা পূজা আসছে, আর বর্তমান করোনা আবহে দেবীর অন্যরূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যেখানে করোনাকে রূপ দেওয়া হয়েছে অসুরের। মানুষদের সচেতন করার জন্য করোনাকে অসুর রূপ দেওয়ার পাশাপাশি দেবীর দশ হাতে করোনা মোকাবিলার দশ রকমের অস্ত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেমন হ্যান্ডওয়াশ, PPE, মাস্ক, পৃথকীকরণ, সামাজিক দূরত্ব, ঔষধপত্র, কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন ইত্যাদি। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের বক্তব্য, “এগুলির সাহায্যেই মা করোনাকে বধ করে পুরো পৃথিবীকে এক নতুন সকাল উপহার দেবে।”
দ্বিতীয় ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে সামাজিক সংযোগকে। যে ছবি নিয়ে তাদের বক্তব্য, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের সকলকে নিজের ধর্ম ও জাতি ভেদাভেদ ভুলে একে ওপরের পাশে থাকতে হবে। সেই জন্য আমরা ছবিতে দেখিয়েছি, সবাই নিজের ধর্ম ভুলে গিয়ে একে অপরের কাঁধে হাত দিয়ে আছে। এই ছবির মধ্যে আমরা বার্তা দিয়েছি যে এই যুদ্ধ একার নয়, সকলের যুদ্ধ।”
তৃতীয় ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে, অতীতে যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য নৌকা বা ঘোড়াকে ব্যবহার করা হত। যার জন্য এখানে নৌকাকে তুলে ধরা হয়েছে এবং দেখানো হয়েছে প্রত্যেক যাত্রীরা নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছে ও মাস্ক পড়ে আছে। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য, “ঠিক সেই ভাবে আমরা কোথাও যাতায়াত করলে আমাদেরকেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ও মাস্ক পড়তে হবে।”
আর করােনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এই সকল পটচিত্রগুলির উদ্বোধন হলো শনিবার। উদ্বোধন করলেন দুবরাজপুর পৌরসভার প্রশাসক পীযূষ পান্ডে, সঙ্গে ছিলেন প্রচেষ্টার সদস্যরা। পাশাপাশি এদিন এই উদ্বোধনের পর বেশ কিছু মানুষকে মাস্ক বিলি করা হয় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফ থেকে।