মন্দির চত্বরে ভিক্ষা করে আয়, সেখানেই ১ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে নজির এই ভিখারীর

Shyamali Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভিক্ষুকরা বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে নিজেদের জীবন নির্বাহ করে থাকেন। এই সকল ভিক্ষুকদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কোন মন্দির বা মসজিদের সামনে ভিক্ষা করে থাকেন। তবে মন্দির বা মসজিদের সামনে ভিক্ষা করে উপার্জন করলেও তাদের কতজনকে আর সেই মন্দির অথবা মসজিদের জন্য কিছু দিতে দেখা যায়!

Advertisements

এমনটা সাধারণত দেখা না গেলেও এইরকমই নজির গড়েছেন ওড়িশার এক ভিখারী। এমন নজির সবাই গড়তে না পারলেও গড়েছেন টুলু বেহারা। উড়িষ্যার ফুলবনির বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরের সামনে তিনি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন। এখন তার বয়স হয়েছে আর এই বয়স কালেই তার ফিরিয়ে দেওয়ার পালা দেখা গেল। স্বাভাবিকভাবেই তার এই কাজে হতবাক হয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা।

Advertisements

টুলু বেহারা কটকের বাসিন্দা। প্রেম করে তিনি বিয়ে করেছিলেন প্রফুল্ল বেহারাকে। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই মৃত্যু হয় প্রফুল্লর। এরপর তিনি নিজের জীবন-যাপন করার জন্য কোন পথ খুঁজে না পেয়ে ভিক্ষা করার পথ বেছে নেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি ভিক্ষা করে নিজের জীবনযাপন করার পাশাপাশি কিছু টাকা সরিয়ে রাখতেন পোস্ট অফিসে। সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন তার সেই সঞ্চয়ের টাকা এক লক্ষ টাকা পার করেছে এবং তারপরই তিনি সেই টাকা যে মন্দিরের সামনে বসে ভিক্ষা করতেন সেখানেই দান করার সিদ্ধান্ত নেন।

Advertisements

তিনি এই টাকা মন্দিরে দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে যে যুক্তি পেশ করেছেন তাতে তিনি জানিয়েছেন, জীবনের অধিকাংশ সময় তার পার হয়ে গিয়েছে, আর এই টাকার প্রয়োজন নেই। তার এইভাবে টাকা দেওয়ার পর যেমন মন্দির কমিটির সদস্যরা হতবাক হয়ে যান ঠিক সেই রকমই এই খবর ছড়িয়ে পড়তে হতবাক হয়ে পড়েছেন সমাজের অন্যান্য বিশিষ্টজনেরাও।

একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টুলু বেহারা জানিয়েছেন, “আমি আমার অস্তিত্ব এবং বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বজগতের প্রভু জগন্নাথের কাছে ঋণী। আমি জীবনের শেষ ধাপে রয়েছি। টাকা দিয়ে কি করব, তাই সবটাই সর্বশক্তিমানকে দিয়ে দিলাম।” অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, স্বামীর মৃত্যুর পর টুলু বেহারা প্রথম থেকেই যে ভিক্ষার পথ বেছে নিয়েছিলেন এমন নয়। প্রথম দিকে তিনি কাজকর্ম করতেন এবং পরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আর কাজকর্ম করতে না পেরে এমন ভিক্ষার পথ বেছে নেন।

Advertisements