স্বামী মারা যাওয়ার দু’বছর পর মা হলেন মহিলা! এই উপায়ে স্বপ্নপূরণ হতে পারে আপনারও

নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রতিটি মহিলারই মাতৃত্বের সাধ পাওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেকের কাছেই সেই স্বপ্ন পূরণ হয় না। ঠিক সেই রকমই এক মহিলার ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে ওই মহিলারই এবার মা হওয়ার স্বপ্নপূরণ হলো তার স্বামীর মৃত্যুর দু’বছর পর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিতেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। তবে কিভাবে এমন অসাধ্য সাধন হলো চলুন দেখে নেওয়া যাক।

স্বামীর মৃত্যুর দু’বছর পর ৪৮ বছর বয়সে এমন মাতৃত্বের সাধ পেলেন উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির সঙ্গীতা কেশরি। ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল বীরভূমের মুরারই ব্লকের অন্তর্গত প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। সেখানেই একটি মুদিখানার দোকান চালিয়ে তাদের সংসার চলত। কিন্তু দু’বছর আগে কোভিড কালে তার স্বামী করোনার কোপে মারা যান। তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তিনি মা হওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

স্বামী মারা যাওয়ার পরও তিনি মাতৃত্বের সাধ পাওয়ার ইচ্ছে কোন ভাবেই ত্যাগ করেননি। মুদিখানার দোকান চালিয়ে কোনোভাবে সংসার চলা ওই মহিলা যখন তার পরিবারকে স্বামীর মৃত্যুর পর মা হওয়ার ইচ্ছের কথা জানান তখন পরিবারের কেউ পাশে দাঁড়ান নি। তবে পরিবারের কেউ পাশে না দাঁড়ালেও তিনি তার অদম্য ইচ্ছে কোন ভাবেই ত্যাগ করেননি। এরপর ওই মহিলা চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার স্বামীর সংরক্ষিত রাখা শুক্রানুর মাধ্যমে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হন।

আরও পড়ুন 👉 Pain Killer: গাঁটে ব্যথা থেকে দাঁতে ব্যথা! কথায় কথায় খাচ্ছেন পেইনকিলার! নিজের বিপদ ডেকে আনছেন নিজেই

জানা যাচ্ছে, কলকাতার কোন এক জায়গায় তার স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষিত ছিল। তবে আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার পুরো প্রক্রিয়া হয় বীরভূমের রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। গত ১১ ডিসেম্বর ওই মহিলা এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে তার সদ্যোজাত সুস্থ রয়েছেন এবং সেই সদ্যজাতের দেখভাল করছেন তার মুদিখানা দোকানের কর্মী রোহিত শেখ ও রোহিতের মা।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমন অসাধ্য সাধন এবং ওই মহিলার অদম্য ইচ্ছে তাকে ৪৮ বছর বয়সে স্বামী মারা যাওয়ার দু’বছর পরেও মাতৃত্বের সাধ দিলেও এখনো পর্যন্ত তার পরিবারের কেউ পাশে দাঁড়ান নি। এমনকি হাসপাতালে কেউ দেখা করতে আসেননি বলেও জানা যাচ্ছে। তবে এই মহিলা যা করে দেখিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং সমাজের অনেকেই তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি এইরকম পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে থাকা মহিলাদেরও নতুন পথ দেখালেন।