নিজস্ব প্রতিবেদন : আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১-এ রয়েছে রাজ্যের সিংহাসন দখলের লড়াই। আর এই লড়াইয়ে ইতিমধ্যেই শাসকদল ও বিরোধী পক্ষরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। দিকে দিকে শুরু হয়েছে উভয়পক্ষের রাজনৈতিক কর্মসূচি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কোনো পক্ষই অন্য পক্ষকে বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ তা বর্তমান করোনাকালে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রতিদ্বন্দিতা দেখেই টের পাওয়া যাচ্ছে।
তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচন কখন হবে, কারা কোন দলের প্রার্থী হবেন সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন অথবা কোন দলই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা না করলেও রামপুরহাট বিধানসভার প্রার্থী কে হবেন তা আগাম জানিয়ে দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শনিবার বীরভূমের রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকে অনুব্রত মণ্ডলের একটি কর্মীসভা ছিল। যে কর্মী সভায় তিনি জানিয়ে দিলেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রামপুরহাট বিধানসভার তৃণমূলের প্রার্থী কে হবেন।
এদিন কর্মীসভা চলাকালীন অনুব্রত মণ্ডল কুবির সাহা নামে এক অঞ্চল সভাপতিকে বলেন, “আচ্ছা সবাইকে বোঝাচ্ছেন তো এই ভোটটা মমতা ব্যানার্জির, এখানকার ক্যান্ডিডেট আশীষ ব্যানার্জি। এই ভোটটা দিদির, দিদির ক্যান্ডিডেট আশীষ ব্যানার্জি। মানুষকে বোঝাচ্ছেন তো?”
এরপরে আবার এক তৃণমূল কর্মী শ্রাবণী মন্ডলকে তিনি বলেন, “১৯০ ভোটে হেরে আছেন। ভোটটা দিদির, আশীষ ব্যানার্জি ক্যান্ডিডেট। ভালবাসেন তো, ভোট করবেন তো।”
তবে এইভাবে আগাম কোন বিধানসভার প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্কে সূত্রপাত হয়েছে। কারণ এযাবত যতবার নির্বাচন হয়েছে, লোকসভা হোক অথবা বিধানসভা সবক্ষেত্রেই প্রার্থী ঘোষণা করতে দেখা গিয়েছে কালিঘাট থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী ঘোষণার আগেই রামপুরহাট বিধানসভার প্রার্থীর নাম ঘোষণা হল অনুব্রত মণ্ডলের মুখ থেকে। এখন আগামী দিনে দেখার বিষয় এটাই যে অনুব্রত মণ্ডলের ঘোষিত প্রার্থীকেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতি দিচ্ছেন কিনা।
আশীষ বন্দোপাধ্যায় রামপুরহাট বিধানসভার চার বারের বিধায়ক। ২০০১, ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে তিনি রামপুরহাট বিধানসভা থেকে জয়ী হন। বর্তমানে তিনি রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তবে গতকাল রামপুরহাটের একটি কর্মীসভাতেই বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সাথে তাঁর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। যার পরেই রাজনৈতিক মহলে নানান জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল। আর এই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর শনিবার একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বারংবার অনুব্রত মণ্ডলকে ঘোষণা করতে দেখা গেল এলাকার ক্যান্ডিডেট হিসাবে আশিস বন্দোপাধ্যায়ের নাম। আর এই নাম ঘোষণার মাধ্যমে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল যেন সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটালেন। যদিও এক জল্পনার অবসান ঘটাতে গিয়ে আর এক বিতর্কের সূচনা বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।