নিজস্ব প্রতিবেদন : বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বুধবার আয়োজিত হল নেতাজি সুভাষ কাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা। আর এই চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা শুরু হওয়ার আগে খেলার উদ্বোধন করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। একেবারে ব্যাট হাতে অন্য ভঙ্গিমায় দেখা গেল তাকে।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে একাধিক জনসভা, কর্মীসভা করতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে। আর এই সকল কর্মীসভা, জনসভায় তিনি স্লোগান তুলেছেন ‘খেলা হবে’। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ভোটের আগে দলের চাপ নিয়েও অন্য মেজাজে অনুব্রত মণ্ডলকে দেখা যাওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তাকে ব্যাট হাতে মাঠে নামতে দেখাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করলো, ‘তাহলে কি খেলা শুরু হয়ে গেল?’
আর এই খেলা শুরু হয়ে যাওয়ার প্রশ্ন শুনেই অনুব্রত মণ্ডল মনে পড়ালেন ‘২০১৭ সালের বোলপুরের শিবতলা’র কথা। অনুব্রত মণ্ডল সরাসরি কিছু না বললেও এদিন বলেন, “২০১৭ সালে খেলা আরম্ভ করেছিলাম শিবতলার মাঠে। মনে আছে, কটা বাজছে? রাত ৯ টার পর খেলা স্টার্ট করবো।” কি হয়েছিল ২০১৭ সালে? অনুব্রত মণ্ডল এদিন কি বোঝাতে চাইলেন?
অনুব্রত মণ্ডল সরাসরি কিছু বলতে না চাইলেও রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “২০১৭ সালের ১৫ই নভেম্বর বোলপুরের শিবপুর মৌজায় জমি ফেরতের দাবিতে জমিদাতারা আন্দোলন করেন। আন্দোলনের সময় শিল্প তৈরি করার নামে নেওয়া জমিতে যে আবাসন তৈরি করা হচ্ছিল সেখানে ভাঙচুর করেন। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের মা’রধ’র করার। ঘটনার খবর পেয়ে ওই স্থানে পৌঁছান অনুব্রত মণ্ডল। আর তারপর।”
অনুব্রত মণ্ডল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তৎকালীন কর্মরত পুলিশ অফিসার কাশীনাথ মিস্ত্রিকে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “৭ টা পর্যন্ত টাইম দিলাম। ন’টার মধ্যে আমি ঢুকে যাবো। একজনারও বাড়ির ঘর রাখবো না। চুরমার করে দেবো। আর যাদের যাদের মোটরসাইকেল আছে তাদের নিয়ে আসুন এ্যারেস্ট করুন। কোন কাহিনী শুনবো না। ন’টার ভেতরে বাড়িঘর ভেঙ্গে আমি চাড়িয়ে দেবো। কোন মান্নান হোসেন টোসেন জানিনা। কে সিপিআইএমের বড় লিডার জানিনা। মে’রে হাত-পা ভেঙ্গে দেবো। এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। সন্ধ্যার ভিতর যদি এ্যারেস্ট না হয় আমি অন্য ঘটনা ঘটিয়ে দেবো।”
[aaroporuntag]
বুধবার অনুব্রত মণ্ডলের এহেন মন্তব্যের পর একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের একবার ফুটে উঠছে ২০১৭ সালের সেই ডগডগে স্মৃতি। ইতিমধ্যেই নানান প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা এবং বিরোধী দলের নেতারা।