Apart from Puri, this place in Bangladesh also has Jagannath temple: পশ্চিমবঙ্গের কাছেই ওড়িশা রাজ্যের অন্যতম তীর্থস্থান হল পুরির জগন্নাথ মন্দির। যেখানে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি। মহা আড়ম্বরে রথ উৎসব পালন করা হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Temple)। প্রায় প্রতিদিনই আনাগোনা থাকে তীর্থযাত্রীদের। তবে শুধু পুরি নয়, পুরির পাশাপাশি কলকাতার বহু জায়গায় নির্মিত হয়েছে পুরর আদলে জগন্নাথ মন্দিরি। বর্তমানে দিঘাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে নির্মিত হচ্ছে পুরর আদলে জগন্নাথ মন্দির।
তবে শুধু দীঘা-পুরি বা কলকাতা নয়, পুরির আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দিরের খোঁজ পাওয়া গেছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশের দুই জায়গাতে রয়েছে জগন্নাথ দেবের প্রতিষ্ঠিত মন্দির। বাংলাদেশের কোথায় রয়েছে এই জগন্নাথ দেবের মন্দির? কবে এই তৈরি এই মন্দির? মন্দিরের সাথে কি ইতিহাস এবং কোন নিদর্শন রয়েছে? জানলে অবাক হবেন।
জানা গিয়েছে বাংলাদেশের কুমিল্লার নিকটে এবং পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলায় অবস্থিত পুরির আদলে তৈরি দুই জগন্নাথ মন্দির। যদি সঠিক বলতে হয় তাহলে বলতে হবে কুমিল্লার নিকটে মন্দিরটির স্থান হল কুমিল্লা থেকে প্রায় দু কিলোমিটার দূরত্বে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত কৃষ্ণপুর গ্রামের জগন্নাথ নামক বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে জগন্নাথ মন্দির। যেখানে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার প্রতিষ্ঠিত মূর্তি আনা হয়েছে ত্রিপুরা থেকে। এই মন্দিরে আসতে গেলে কুমিল্লা থেকে রিকশা বা সিএনজি অটো করে সহজেই পৌঁছানো যায়।
আরও পড়ুন ? Digha Jagannath Temple: মূর্তি তৈরি, এবার দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের পালা, কবে জানুন
মন্দিরে নির্মাণ কার্য সম্পর্কে জানা যায় দশম বা একাদশ শতকে নির্মিত হয় পুরির জগন্নাথ মন্দির। পরবর্তীতে ষোড়শ শতকে তৈরি হয় বাংলাদেশের কুমিল্লার এই জগন্নাথ মন্দির (Jagannath Temple)। যা সতেরো রত্ন মন্দির নামেও স্থানীয় এলাকায় পরিচিত। কুমিল্লার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের সময় ত্রিপুরার মহারাজা ছিলেন দ্বিতীয় রত্ন মানিক্য। তবে পরবর্তীকালে ১৭৬১ সালে এই মন্দির নির্মাণ যখন সম্পন্ন হয় তখন মহারাজা ছিলেন কৃষ্ণ কিশোর মানিক্য। তাঁর হাতেই এই মন্দিরে আসেন জগন্নাথ দেব। আবার অনেকের মতে, এই মন্দির নির্মিত হয় মহারাজ রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুরের হাতে। অপরদিকে পাবনার জগন্নাথ মন্দির নির্মিত হয় ১৩০০ থেকে ১৪০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। যার হান্ডিয়াল মন্দির নামেও পরিচিতি রয়েছে।
মন্দিরের কারুকার্যের কথা যদি বলি বাংলাদেশের কুমিল্লার জগন্নাথ মন্দিরটি টেরাকোটা দ্বারা নির্মিত। এই মন্দিরটি নির্মাণে মোট ১৭টি রত্ন রয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয়তে আটটি করে এবং মধ্যস্থলে আরো একটি যোগ করে ১৭টি রত্ন দ্বারা নির্মিত হয়েছে কুমিল্লার জগন্নাথ মন্দির। যে কারণে মন্দিরটির নাম ১৭ রত্ন। মন্দিরের দেয়ালসহ চারদিকে রয়েছে ঘন্টা, ফুল, লতা-পাতা ও জ্যামিতিক কারুকার্য। পাশাপাশি মন্দিরের প্রবেশপথ, দরজা জানালায় নির্মিত রয়েছে খিলান আকৃতির নকশা। বর্তমান সময়ে মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মন্দিরের রত্নগুলিও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অপরদিকে পোড়ামাটির কারুকার্যের নিদর্শন রয়েছে পাবনার জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Temple)। যা উত্তর বাংলাদেশের হিন্দু মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে লবণাক্ততায় মন্দিরটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দোল উৎসব, রথযাত্রায় বাংলাদেশের এই জগন্নাথ মন্দিরগুলিতে সমাগম ঘটে হিন্দু ধর্মালম্বী ব্যক্তিদের। আনন্দ উৎসবের মেতে ওঠে সকলে।