APJ Abdul Kalam always objected to receiving freebies anything: ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম (APJ Abdul Kalam) ছিলেন এক মহান বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক এবং সমাজসেবক। তিনি ছিলেন একজন নৈতিকতাবাদী মানুষ, যিনি সর্বদা সৎ এবং স্বচ্ছতার আদর্শে বিশ্বাস করতেন। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন, তিনি এমন একটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন যা তার নৈতিকতার পরিচয় বহন করে।
২০১৪ সালে, কালাম (APJ Abdul Kalam) একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানের স্পনসর ছিল একটি গ্রাইন্ডার সংস্থা। অনুষ্ঠানের শেষে, সংস্থার তরফ থেকে কালামকে একটি গ্রাইন্ডার উপহার দেওয়া হয়। কালাম উপহার নিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তিনি কোনো উপহার নিতে পারবেন না। তিনি যেটুকু কাজ করেন তার বিনিময়ে পান অর্থ এবং এটাই তার সম্মান। উপহারের জন্য তিনি এসব করেন না।
কিন্তু সংস্থার কর্তৃপক্ষের জোরাজুরিতে কালাম (APJ Abdul Kalam) শেষ পর্যন্ত উপহারটি গ্রহণ করেন। তবে তিনি অনুষ্ঠানের শেষে ফিরেই ওই গ্রাইন্ডারটির বাজারদর অনুযায়ী একটি চেক লিখে সংস্থার নামে পাঠিয়ে দেন। চেকটিতে ৪৮৫০ টাকা লেখা ছিল। কালামের এই আচরণে সংস্থার কর্ণধারেরা বিস্মিত হয়ে যান। তারা কালামের কাছে চেক ফেরত দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু কালাম তা গ্রহণ করেননি।
তিনি বলেন, বিনামূল্যে প্রাপ্তি নয়, উপহারেরও দাম মিটাতে হয়। তিনি তার উপহারের মূল্য পরিশোধ করে দেন। খোদ রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে চেক পেয়ে সংস্থার কর্ণধারেরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়েন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, এই চেকটি তাঁরা ব্যাঙ্কে জমা করবেন না, স্মারক হিসেবেই রেখে দেবে। ব্যাঙ্ক থেকে যখন ওই অঙ্কের টাকা ডেবিট হয়নি তখনই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন কালাম। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, চেক যদি ভাঙানো না হয় তাহলে গ্রাইন্ডারটি ফেরত দিতে বাধ্য হবেন তিনি। সংস্থাটি শেষ পর্যন্ত চেকটি ভাঙাতে বাধ্য হয় কিন্তু চেকের একটি কপি করে সেটি বাঁধিয়ে রাখে তারা।
কালামের (APJ Abdul Kalam) এই ঘটনাটি তার নৈতিকতার পরিচয় বহন করে। তিনি সর্বদা সৎ এবং স্বচ্ছতার আদর্শে বিশ্বাস করতেন। তিনি মনে করতেন, কেউ যদি কোনো উপহার গ্রহণ করে, তাহলে তার উচিত সেই উপহারের মূল্য পরিশোধ করা। কালামের এই ঘটনাটি সবার জন্য একটি শিক্ষা। এর থেকে শেখা যায় যে, যেকোনো উপহার গ্রহণের আগে তার মূল্য সম্পর্কে ভাবতে হবে। যদি কোনো উপহার গ্রহণ করা হয় তাহলে অবশ্যই উচিত সেই উপহারের মূল্য পরিশোধ করা।