Araku Valley of Bengal: ছুটি কাটাতে চলে যেতে পারেন বাংলার আরাকু ভ্যালিতে, খোঁজ রইল প্রতিবেদনে। বাঁকুড়ায় একদম ঘরের কাছে ছুটি কাটানোর ভালো জায়গার খোঁজ করছেন? তাহলে চলে যেতে পারেন বাংলার আরাকু ভ্যালিতে (Araku Valley of Bengal)। দূরত্ব খুব বেশি নয়, রানীগঞ্জ থেকে খুবই কাছে বাঁকুড়ার এই জায়গাটি। ভ্রমণস্থল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু বাঁকুড়া মানে শুধুমাত্র বিষ্ণুপুরকে বোঝায় না। সমগ্র বাঁকুড়া জেলা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে পাহাড়ি উপত্যকা। প্রত্যেকটা জায়গাই অত্যন্ত মনোরম। এদের মধ্যে অন্যতম হলো বাঁকুড়ার বিহারীনাথ পাহাড় এলাকা।
বাঁকুড়ার পূর্বঘাট পর্বতমালার অংশবিশেষ এই বিহারীনাথ পাহাড়। বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত পর্বতগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল বিহারীনাথ পাহাড়ের সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৪৫১ মিটার। এই পার্বত্য এলাকা জুড়ে বিরাজ করছে অত্যন্ত মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ। সবকিছুই আপনাকে আকর্ষিত করবে। ভ্রমন প্রিয় বিশেষত পাহাড় প্রিয় পর্যটকদের কাছে বাংলার আরাকু ভ্যালি (Araku Valley of Bengal) নামে এই জায়গাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
বাঁকুড়ার বিহারীনাথ পাহাড়ি এলাকায় বা বাংলার আরাকু ভ্যালিতে (Araku Valley of Bengal) ঘুরতে গিয়ে থাকার জায়গা নিয়ে কোনো রকম চিন্তা করতে হবে না। এখানে থাকার জায়গা হিসেবে রয়েছে একাধিক অপশন। এই পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত একাধিক হোটেল রয়েছে যা মধ্যবিত্তের সামর্থের মধ্যেই। আপনি চাইলে কোন বড় রিসর্টেও থাকতে পারেন। এছাড়া রয়েছে পাহাড়ের কোলে অবস্থিত বিভিন্ন হোম-স্টেতে থাকার সুযোগ। প্রত্যেকটি জায়গাতেই পাওয়া যাবে ভালো বাঙালি খাবার। তাই খাওয়া দাওয়া নিয়েও কোনো রকম চিন্তা করতে হবে না পর্যটকদের। শুধু নিশ্চিন্তে ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিতে হবে। হাতে দুই-এক দিনের ছুটি থাকলে চলে আসুন এখানে। আর নিশ্চিন্তে নিরিবিলিতে কাটিয়ে যান দুটো দিন।
বিহারীনাথ পাহাড়ি এলাকার সংলগ্ন একাধিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যা আপনাকে আনন্দ দেবে। বিহারীনাথ পাহাড়টিকে ঘিরে রয়েছে একাধিক ঝর্ণা। রামদা, সীতা এবং লক্ষণ নামক ঝর্ণাগুলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এছাড়াও এখানকার সবচেয়ে গভীরতম জঙ্গল রয়েছে এই পাহাড়ি এলাকাটিকে ঘিরেই। সেই জঙ্গলে আপনি দেখা পেতে পারেন হাতি, হরিণ, বন্য শুয়োর ইত্যাদি। এছাড়াও নানা জাতির অসংখ্য পাখির বাসা এই জঙ্গল। দেখা পেতে পারেন তাদেরও। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিহারীনাথের মন্দির। এই মন্দিরের নামকরণ থেকেই পাহাড়টির নামকরণ হয়েছে বিহারীনাথ পাহাড়। মূলত এটি একটি শিব মন্দির। পাহাড়ের গায়ে অবস্থিত এই শিব মন্দিরে নিত্য পূজা দিতে যান স্থানীয়রা। পেয়ে যাবেন পাহাড়ের গায়ে ট্রেক করার সুযোগও। ট্রেক করেই ওই মন্দিরে পৌঁছাতে হয়। প্রত্যেক বছর এই মন্দিরকে ঘিরে বড় মেলাও বসে শিব পুজোর সময়। তবে বর্ষায় বিহারীনাথ পাহাড়ের সৌন্দর্য আরো বেশি করে ফুটে ওঠে। তাই ঘুরতে যাওয়ার জন্য এই সময়টাই সবথেকে ভালো।
হাতে যদি সময় কম থাকে তাহলেও চলে যেতে পারেন ঘরের কাছেই অবস্থিত বাংলার আরাকু ভ্যালি (Araku Valley of Bengal) তথা বিহারীনাথ পাহাড়ি এলাকায়। এক অন্যরকম অনুভূতি হবে এখানে গেলে। কলকাতা থেকে ট্রেন, বাস সব রকম পরিষেবা পাওয়া যাবে বিহারীনাথ পাহাড় যাবার জন্য। যদি আপনি ট্রেনে করে আসতে চান তাহলে শিয়ালদা থেকে বাঁকুড়াগামী যে কোন ট্রেনে উঠে পড়ুন। আর যদি বাসে করে আসতে চান তাহলেও কলকাতা থেকে সরাসরি বাঁকুড়ার বাস পরিষেবা চালু রয়েছে। আর যদি আপনি নিজস্ব গাড়িতে করে যেতে চান তাহলে তো কথাই নেই। যে কোন জায়গা থেকে সরাসরি পৌঁছে যাবেন বিহারীনাথ পাহাড়ি এলাকা পর্যন্ত। কলকাতা থেকে বিহারীনাথ অব্দি গাড়িতে করে যেতে চাইলে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কটিকে ব্যবহার করতে হবে।