সীমান্তে চিনা সেনারা চোখ রাঙালেই পাল্টা সেনাবাহিনীকে গোলাগুলির অনুমতি দিলো কেন্দ্র

Madhab Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : জুন মাসের ১৫ তারিখ রাতে গালওয়ানে LAC বরাবর চিন ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে সংঘাত শুরু হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২০ জন সেনা জওয়ান শহীদ হন। ঘটনায় চিন তাদের সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কোনো উচ্চবাচ্য না করলেও শনিবার একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে ভি কে সিংহ জানান, “আমাদের ভারতীয় সেনারা জানিয়েছে, চিনের সেনাবাহিনীর অন্তত মৃতের সংখ্যা ৪৩।”

আর যখন দুই দেশের সীমান্ত এলাকা দিনের পর দিন উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিচ্ছে তখন ভারত চীন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অর্থাৎ লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ভারতীয় সেনাদের অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে নীতির পরিবর্তন আনলো কেন্দ্র। এক দশক আগের চুক্তিতে পরিবর্তন করার পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফ থেকে সেনাবাহিনীকে আরও সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হয়। এক দশক আগের চুক্তি অনুযায়ী এই প্রকৃত সীমান্ত রেখায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘাত হলেও অস্ত্র না ব্যবহার করার নিয়ম ছিল। তবে এবার যখন পরিস্থিতি দিনের পর দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে তখন চিনা সেনাবাহিনী চোখ রাঙালে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে হাত গুটিয়ে বসে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে অস্ত্র, চলবে গোলাগুলি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগেই জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ গ্রহণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া রয়েছে সেনাবাহিনীকে। আর এবার সেই ঘোষণায় অফিশিয়ালি জানিয়ে দেওয়া হল। পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছিলেন। আর সেই বৈঠকেই চীনের আগ্রাসন রুখতে ভারতীয় সেনাদের ফ্রি-হ্যান্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে খবর পাওয়া যায়। আর রবিবার সেই খবরের সত্যতা সামনে আসে।

ভারত ও চীনের মধ্যে প্রকৃত সীমান্তরেখা নিয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি রয়েছে। ১৯৯৬ এবং ২০০৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সেনারাই এলএসি বরাবর বিবাদে জড়ালেও অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে না এমনটা নিয়ম ছিল। কিন্তু গত ১৫ তারিখ যে ঘটনা ঘটে সেই ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ। আন্তর্জাতিক মহলেও চীনের এমন আগ্রাসন নীতি নিয়ে সমালোচনা করতে দেখা যায়। এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের নিয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তিনি দেশবাসীকে আশ্বাস দেন, চীনা সেনারা ভারতে প্রবেশ করতে পারেনি অথবা ভারতের মাটিতে তারা কোন রকম ঘাঁটি তৈরি করতে পারেনি। তারা যেটা করার চেষ্টা করেছিল তা প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনারা। আর এসবের পর ভারতীয় সেনাদের ভারত-চীন প্রকৃত সীমান্তরেখায় এমন স্বাধীনতা প্রদান করা আলাদা তাৎপর্য এনে দিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।