নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সকলকে চমকে দিয়ে গত শনিবার রাজনৈতিক সন্ন্যাস ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন। এর আগে বিজেপির এই সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব হারানোর পর রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। তবে হঠাৎ সুযোগ আসায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। আর তার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসছে ঝালমুড়ি তত্ত্ব।
২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগদানের পর তাকে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করে বিজেপি। এরপর সেই নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীত্ব পান। আর তারপর ২০১৫ সালে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের উদ্বোধনে কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার ঝালমুড়ি খাওয়ার সেই ঘটনা নিয়ে তখন কম বিতর্ক মাথাচাড়া দেয় নি। আর এবারও তৃণমূলে যোগদানের পর সেই তত্ত্ব নিয়েই বিতর্ক শুরু হতে দেখা গেল। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা এই ঝালমুড়ি তত্ত্ব নিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে আষ্টেপৃষ্ঠে বিঁধেছেন। অনুপম হাজরার কথায়, ‘ঝালমুড়ি রফা আগেই হয়ে গিয়েছিল। জাস্ট অপেক্ষা করা হচ্ছিল, রাজ্যসভাতে কীভাবে পাঠানো যায়।’
আর এই সকল কটাক্ষের মাঝে পড়ে বাবুল সুপ্রিয় রবিবার পুনরায় সাংবাদিক বৈঠক করে ছ’বছর আগে মমতার সঙ্গে সেই ঝালমুড়ি খাওয়ার সময় কি কথা হয়েছিল তা ফাঁস করলেন। বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘কাজের জন্য কেবল ঝালমুড়ি খাবেন কেন? সকলের সঙ্গেই বসে কথা বলতে রাজি।’
ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয় জানান, “২০১৫ সালে স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের উদ্বোধনে কলকাতায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা নজরুল মঞ্চের সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। নিরাপত্তার কারণে এলাকায় গাড়ি রাখতে দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তুমি তো রাজভবনেই যাচ্ছ। নৈশভোজ রয়েছে। আমার গাড়িতে এসো।’ আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক গাড়িতে বসেছিলাম। তখন নতুন মন্ত্রী হয়েছি। অনেকগুলি কথা বলার ছিল। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের পাশাপাশি ইএসআই হাসপাতালের বিষয়টিও ছিল।”
এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, “গাড়িতে যাওয়ার সময় ভিক্টোরিয়ার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। আমায় ঝালমুড়ি খেতে বলেছিলেন। একজন প্রশাসনিক প্রধান ঝালমুড়ি খেতে বলেছিলেন। তাই খেয়েছিলাম। কেন খাব না? কাজের জন্য সকলের সঙ্গে বসে খেতে রাজি। আগামীদিনে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কাজের জন্য ধোকলা খেতে হয়, তাহলেও আমি রাজি।”
সম্প্রতি বাবুল সুপ্রিয়র তৃণমূলে যোগদানের পর অনুপম হাজরা কটাক্ষ করে বলেছেন, “তার মানে ‘ঝাল-মুড়ি’র রফা আগেই হয়ে গেছিল, just অপেক্ষা করা হচ্ছিল রাজ্যসভাতে কিভাবে পাঠানো যায়! তাই হয়তো বেচারী অর্পিতা দেবীকে এত তড়িঘড়ি করে রাজ্যসভা ছেড়ে থিয়েটারে মন দিতে বলা।”
তার মানে "ঝাল-মুড়ি"র রফা আগেই হয়ে গেছিল, just অপেক্ষা করা হচ্ছিল রাজ্যসভা তে কিভাবে পাঠানো যায় !!! তাই হয়তো বেচারী অর্পিতা দেবীকে এত তড়িঘড়ি করে রাজ্যসভা ছেড়ে থিয়েটারে মন দিতে বলা !!! pic.twitter.com/zDke34F5oP
— Dr. Anupam Hazra ?? (@tweetanupam) September 18, 2021
যদিও বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাবুল সুপ্রিয়র একটিই উত্তর, ‘ওরকম অনেক হাজরা আছেন’।