Bairagi Dighi: দিন দিন যে পরিমাণ কাজের চাপ, বাচ্চাদের পড়াশোনার চাপ বেড়ে চলেছে তাতে মানুষের একমাত্র গন্তব্যস্থান কর্মক্ষেত্র বা বিদ্যালয় থেকে বাড়ি; আবার বাড়ি থেকে কর্মক্ষেত্র বা বিদ্যালয় হয়েছে। একটা দিন ছুটি পেলেই মনে হয় এই সমস্ত চেনা জায়গা থেকে দৌড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যায়। তবে দিন দিন খরচও এত বেড়ে যাচ্ছে যে বেশি পয়সা খরচ করে কোথাও যাওয়াটাও অনেকের ক্ষেত্রে মুশকি। তাই একদম কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন হেরিটেজ লেকে (Heritage Lake)।
কোচবিহার শহরের প্রাণকেন্দ্রে, মদনমোহন বাড়ির সন্নিকটে অবস্থিত বৈরাগী দিঘি (Bairagi Dighi), যা রাজ আমলে খনন করা হয়েছিল, আজ নতুন এক রূপে পরিবেশিত হয়েছে। এককালে এই দিঘির জল মদনমোহন বাড়ির পুজো ও মন্দিরের ভক্তদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ব্যবহৃত হতো। আজকাল, এই পবিত্র জল স্থানীয় মানুষের কাছে গঙ্গা জল হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন শুভ অনুষ্ঠানেই। বহু বছর ধরে ব্যবহারে দিঘির চারপাশ ঝোপ-জঙ্গল পূর্ণ ছিল, যা এখন পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়েছে।
বর্তমানে দিঘির (Bairagi Dighi) চারপাশে একটি নতুন জৌলুস এসেছে- সুন্দর বসার ব্যবস্থা, চমৎকার ল্যান্ডস্কেপ, এবং আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোচবিহারের পর্যটক শোভন হোড় বলছেন রাজ আমলের ঐতিহ্যের সাক্ষী এই দিঘি আজ নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। চারপাশের ঝোপ-জঙ্গল বিদায় নিয়েছে, আর এসেছে গাছপালা ও বসার ব্যবস্থার এক মনোরম পরিবেশ। নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি গার্ড উপস্থিত থাকায়, পর্যটকরা আর কোনো সামাজিক সমস্যা নিয়ে চিন্তিত নয়।
একইভাবে, পর্যটক মাধব দাস মন্তব্য করেছেন মদনমোহন বাড়ি বা কোচবিহারের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসলে বৈরাগী দিঘির (Bairagi Dighi) অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এখানে বসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করলে মনে হবে যেন এক শান্তি আনা স্বর্গে প্রবেশ করেছি। বৈরাগী দিঘির পাড়ে কিছুক্ষণ বসে ছবি তোলার আনন্দ সত্যিই অপ্রতিরোধ্য।
কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল ধারা জানাচ্ছেন বৈরাগী দিঘির (Bairagi Dighi) ৯০ ও তার চারপাশের সংস্কারের মাধ্যমে তারা একটি আধুনিক অভিজ্ঞতা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। নিরাপত্তা ও সৌন্দর্যের মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা রাখছেন, আগামীতেও পর্যটকরা এখানে আসবেন এবং নতুন সৌন্দর্যের অভিজ্ঞতা নেবেন।
বর্তমানে, এই নতুনভাবে সংস্কার করা পার্কে মানুষের ভিড় বাড়ছে। গাছের ছায়ায় বসে প্রকৃতির শান্তি ও সৌন্দর্য উপভোগ করার আনন্দ সত্যিই অপরিসীম। মাত্র ২০ টাকার প্রবেশমূল্যে এই প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা লাভ করা এক বিশাল সুযোগ—যা পর্যটকদের জন্য একটি অভূতপূর্ব অফার। কম খরচে ঘোরাঘুরির সেরা জায়গাগুলোর মধ্যে হেরিটেজ লেক অন্যতম। এছাড়া পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্যও এটি আদর্শ জায়গা।