গ্রামে নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক, বাঁশের খুঁটি পুঁতে কামাল গ্রামবাসীদের

Shyamali Das

Published on:

বাঁশের স্ট্যান্ডেই শুধু পাওয়া যায় টাওয়ার! ডিজিটাল ইন্ডিয়াতে শোচনীয় পরিস্থিতিতে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।

নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমান দিনে মানুষের চারটি প্রাথমিক প্রয়োজন, বস্ত্র, বাসস্থান, খাদ্য ও মোবাইল নেটওয়ার্ক। মোবাইল ফোনে সিগন্যাল না থাকলে মানুষের কাছে তা সমস্যার এক বিরাট কারণ। টাকা লেনদেন থেকে কর্মক্ষেত্র হোক বা আপনজনদের সাথে কথোপকথন, সবই হয় এই মুঠোফোনে। সেই পরিস্থিতিতে যদি ফোনেই সিগন্যাল বা নেটওয়ার্ক না থাকে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি হয় শোচনীয়। কোথাও দূরে ঘুরতে গেলেও অনেক ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে ফোনে টাওয়ার মেলেনা। তাতেই মানুষের মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। এমনকি ফোনে কোনো কল বা মেসেজও করা যাচ্ছেনা, এমন পরিস্থিতিতে যদি আপনাকে পড়তে হয় তাহলে? বাইরে কোথাও সাময়িক ভাবে নেটওয়ার্ক না থাকা মেনে নাওয়া গেলেও আপনি যেখানে বসবাস করেন সেখানে যদি প্রতিনিয়ত এইরকম পরিস্থিতির শিকার হতে হয়? ভাবনাটাই যেন ভয়ঙ্কর!

সাধারণত আমরা এমন পরিস্থিতি কল্পনাও করতে চাইনা। ভারতবর্ষ যেখানে বর্তমানে ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, এখন ভারতবাসীর বেশিরভাগ কাজই হয়ে থাকে ডিজিট্যাল মাধ্যমে, সেখানে ভারতবর্ষের মধ্যেই এমন এক এলাকা যেখানে সামান্য মোবাইল সিগন্যাল পাওয়া দুষ্কর, এমনটা কল্পনা করা যায়না। কিন্তু এমনই এক অঞ্চল ভারতবর্ষের অন্ধ্রপ্রদেশের ধামানাপল্লি অঞ্চল। কিন্তু এই সমস্যার মধ্যেও এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার পথ খুঁজে বার করে নিয়েছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। নেটওয়ার্কের এই সমস্যাকে মেনে নিয়ে বসে থাকেননি তারা, বরং এর সমাধান হিসেবে ফোনের নেটওয়ার্ক পেতে তাঁরা ব্যবহার করছেন নিজেদেরই তৈরি অভিনব বাঁশের টাওয়ার। যাতেই কামাল।

এই পথ অবলম্বন করার আগেও ধামানাপল্লির গ্রামবাসীদের সামান্য একটা ফোন করতেও ছুটে যেতে হত প্রতিবেশী গ্রামে। কিন্তু এখন আর তার প্রয়োজন পড়ে না। নিজেদের গ্রামেরই যে-সমস্ত জায়গায় ভালো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়, সেখানে ফোন রাখার স্ট্যান্ডের মতন করে বাঁশ পুঁতে রেখেছেন, যাতে পরবর্তীতে সেখানে ফোন রেখে নেট ব্যবহার করে কাজে লাগাতে পারেন।

ফোন রাখার স্ট্যান্ডের মতো করে বাঁশ পোঁতা থাকলেও সেই বাঁশের স্ট্যান্ডকে নড়াচড়া করলেই টাওয়ার চলে যাবে, এমনই নেটওয়ার্কের অবস্থা সেখানে। তবে সমস্যা শুধু তাই নয়। কিছু অঞ্চলেই টাওয়ার পাওয়া যায় বলে সেই বাঁশের কাছে পড়ে লম্বা লাইন। ফলে সেখানে গেলেই যে ফোন রেখে কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে এইরকম নেটওয়ার্ক অঞ্চলে সাতটি টাওয়ার বসিয়েছেন বাসিন্দারা।

মানুষ যেখানেই বিপদে পড়ে সেখানেই তৈরি হয় আবিষ্কার। কিন্তু এই ভাবে আর কতদিন তারা কাজ করতে পারবেন এই বিষয়টিও ভাবার প্রয়োজন আছে।