বিজ্ঞাপন

৫ই এপ্রিল রাতে প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ রাখার আগে জানুন বিদ্যুৎ মন্ত্রকের নির্দেশিকা

বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদন : চলতি সপ্তাহের শুক্রবার সকাল ৯ টার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রাখার সময় দেশের জনগণের কাছে অনুরোধ করেন, রবিবার রাত ৯ টার সময় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো বন্ধ করে বাড়ির বারান্দায়, ছাদে অথবা দরজায় দাঁড়িয়ে প্রদীপ, মোমবাতি, টর্চ অথবা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালানোর জন্য। মহাশক্তিকে জাগিয়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই আহ্বান।

কিন্তু এই ঘোষণার পরেই হুলস্থুল পরে যায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে। আশঙ্কা বাড়তে শুরু করে যদি একসাথে দেশের সমস্ত আলো বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে গ্রিড ব্যবস্থা ভেঙে যেতে পারে। এমনকি এনিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীকে অনেকেই ট্যুইট করেন, চিঠি দেন। কারণ একবার গ্রিড ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে অন্ততপক্ষে ৪৮ ঘন্টা অন্ধকারে থাকতে হবে গোটা দেশকে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এরপরেই শনিবার নড়েচড়ে বসে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফ থেকে নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়। যে নির্দেশিকায় বলা হয়, শুধুমাত্র আলো নেভানো হবে, ফ্যান, এসি, ফ্রিজের মতো অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম সচল থাকবে। এছাড়াও রাস্তাঘাট, হাসপাতাল ও পুলিশ ষ্টেশনগুলিতে আলো নেভানো হবে না।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফ থেকে এদিন স্পষ্ট করে জানানো হয়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৫ ই এপ্রিল রাত্রি ৯ টার সময় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নেভানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যার কারণে দেশের গ্রিড ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়তে পারে। তার জন্য একাধিক ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের তরফ থেকে। প্রধানমন্ত্রী কেবলমাত্র আলো নেভানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তাই ফ্যান, এসি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, টিভি বন্ধ করার দরকার নেই। শুধুমাত্র আলো নেভালেই হবে।”

এছাড়াও এদিনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “দেশের সমস্ত প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে যাতে করে রাস্তাঘাটের আলো যেন বন্ধ করা না হয়। তাতে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়তে পারেন। এছাড়াও হাসপাতাল, জরুরী পরিষেবার সাথে যুক্ত অফিসগুলি ও থানার আলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে।” আর এই নির্দেশিকা মানলেই গ্রিডের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

স্টেট লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের কর্তারা এর আগে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের মতো দেশের সমস্ত আলো একসাথে নিভে গেলে বিদ্যুতের চাহিদা বিশাল ঘাটতি ঘটবে। ভারতে যে সকল গ্রিড রয়েছে সেগুলির ক্ষমতা হলো ৩৭০ গিগাওয়াট। আর সাধারণভাবে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ১৫০ গিগাওয়াট। কিন্তু এই চাহিদার ঘাটতি হলে বিদ্যুতের পরিমাণ বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাবে। যে কারণে পাওয়ার গ্রিডের উপর চাপ পড়বে। আর এরপর যখন ৯ মিনিট পরে সমস্ত আলো একসাথে জ্বলে উঠবে তখন সেই চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে সিস্টেমটাই ভেঙে পড়বে। যে কারণে একাধিক রাজ্যে ব্ল্যাক আউটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে সমস্যায় পড়বেন কোটি কোটি মানুষ।

প্রসঙ্গত, গ্রিডের এই সমস্যার সম্মুখীন আমরা এর আগেও একবার হয়েছিলাম ২০১২ সালের ৩০ শে জুলাই। যার প্রভাব পড়েছিল উত্তর ও পূর্ব ভারতে। ৩০ ও ৩১ শে জুলাই অন্ধকারে ছিল ভারতের এই অংশ। ভোগান্তির শিকার হয়েছিল ৪০০ মিলিয়ন মানুষকে।