নিজস্ব প্রতিবেদন : অনেকেই রয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত ধূমপান করে থাকেন। ধূমপান করার ক্ষেত্রে সিগারেট অন্যতম, তবে আবার অনেকেই রয়েছেন, যাদের কাছে সিগারেটের থেকে বিড়িই (Bidi) প্রিয়। আবার অনেকেই রয়েছেন যারা টাকা পয়সার কারণে সিগারেটের বদলে বিড়িকেই বেছে নেন।
এমনকি এই সকল বিড়ি-প্রেমীদের দেখা যায়, সকালে ঘুম থেকে উঠেই কয়েকটান টেনে নেন, খাবার পরে হজমের ওষুধের মত তাদের কাছে কাজ করে বিড়ি, আবার পটি যাওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমোনোর আগে পর্যন্ত কোন না কোন কারণে ফ্রিতে টান বসান। কিন্তু এই সকল বিড়ি-প্রেমীদের জন্য এবার একটি খারাপ খবর এসে গেল।
খারাপ খবর অনুযায়ী, আর হয়তো মেরেকেটে কয়েক বছর আর তারপর হয়তো আর বাংলায় বিড়ি নাও মিলতে পারে। বিড়ি না মেলার কারণ হিসেবে যা সামনে এসেছে তা হল, কেন্দু পাতা। বিড়ি তৈরি করার জন্য কেন্দু পাতা হলো অন্যতম উপাদান। কিন্তু বিড়ি শ্রমিকদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সরকারি সাহায্যের অভাবে বিড়ি শিল্প (Bidi Raw Materials Crisis) এখন ধুঁকছে। সরকারিভাবে কেন্দু পাতার সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি করার বিষয়ে বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে শোনা গেলেও ওই সহায়ক মূল্যে যাদের এই কেন্দু পাতা কেনার কথা সেই সকল সমবায়গুলিতে এক দশকের বেশি সময় ধরে তালা পড়েছে।
আরও পড়ুন ? Coughing: কাশি সারাতে দাওয়াই ‘বিড়ি’! এই ম্যাজিক সম্পর্কে ৯০% মানুষই জানেন না
আর এই ঘটনার ফলেই জঙ্গলমহলে এখন কেন্দু পাতা সংগ্রহের কাজ একপ্রকার বন্ধ। আর এর ফলেই বিড়ি শিল্প ঠিকঠাক ভাবে চালানোর জন্য বিড়ি প্রস্তুতকারীদের ভিন রাজ্য থেকে কেন্দু পাতা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আবার ভিন রাজ্য থেকে কেন্দু পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে বিড়ি শিল্প আরও ধুঁকতে শুরু করেছে। আর এসবের ফলেই বিড়ি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বাংলায়।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের হাজার হাজার আদিবাসী ও তপশিলি মানুষেরা কেন্দু পাতা সংগ্রহের কাজে যুক্ত ছিলেন একসময়। তারা সেই সকল পাতা সংগ্রহ এবং বাছাই করার পর তা সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতেন সমবায়গুলিতে। এরপর আবার সেই সকল সমবায়গুলি কেন্দু পাতা পৌঁছে দিত জেলায় জেলায় থাকা বিড়ি তৈরির কারখানাগুলিতে। পাশাপাশি সমবায়গুলি নিয়মিত গাছের কাটিং করার ফলে ভালো মানের কেন্দু পাতা পাওয়া যেত। কিন্তু এখন এই সকল সমস্ত কাজই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বিড়ি তৈরির জন্য কাঁচামালের যোগান নিয়ে ধীরে ধীরে প্রশ্ন করতে শুরু করছে।