হিমাদ্রি মন্ডল : গত ১৪ই সেপ্টেম্বর বীরভূমের সিউড়ি থানার সামনে বিজেপি মহিলা মোর্চার সদস্যরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। আর এই বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বীরভূম জেলা বিজেপির সভাপতির শ্যামাপদ মন্ডল জেলার মহিলা মোর্চা কর্মীদের অস্ত্র হাতে দেবী দুর্গার মতো রাস্তায় নামার আহ্বান দিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি এই কর্মসূচি থেকেই তিনি পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করেন।
আর এই সকল মন্তব্য এবং হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার থানায় তলব করা হয় শ্যামাপদ মন্ডলকে। থানায় তলব করে প্রায় ঘন্টা চারেক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সিউড়ি থানায় বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলকে তলব করার ঘটনা এই প্রথম নয়, এর আগেও ১৮ই সেপ্টেম্বর তাকে রামপুরহাট থানায় তলব করা হয়েছিল। যেখানেই প্রায়ই ৯ ঘন্টা ধরে তাকে জেরা করা হয়।
গত ১৪ তারিখের বিজেপির মহিলা মোর্চার কর্মসূচিতে বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল ঠিক কি বলেছিলেন? তিনি মহিলা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “আপনারা যে সকল মায়েরা এখানে আছেন, আপনাদের কাছে আমি জোড়হাত করে অনুরোধ করছি, আপনারা দেখে চুপচাপ বসে থাকবেন না? এই ভাবে বেঁচে থাকার কোনো দাম নেই। আপনারা দুর্গার মত দশ হাতে দশটা অস্ত্র নিয়ে আপনারা রাস্তায় নেমে পড়ুন। তারপর যা কিছু হয় আমরা দেখে নেবো।”
এর পাশাপাশি তিনি সেদিনই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না, বিজেপি কর্মীদের নানান মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছে এই অভিযোগে পুলিশ কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “বিজেপির মায়েরা বোনেরা শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না। আপনারা যদি মনে করেন বিজেপিদের ঘুমাতে দেবো না, তাহলে আমিও কথা দিলাম আমি রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে বীরভূম জেলার কোন পুলিশকে আমি শান্তিতে ঘুমোতে দেবো না। আমরা প্রত্যেকদিন জেলার কোথাও না কোথাও বিজেপির কোনো না কোনো কর্মসূচি রাখবো। আর আপনাদেরকে এইভাবে রোদে গরমে, খেয়ে না খেয়ে দাঁড় করিয়ে রাখবো। অতএব আমরাও ঘুমাবো না, আপনাদের কেউ ঘুমাতে দেবো না।”
আর এই সকল মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পুলিশের তরফ থেকে বীরভূম বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। তবে এই সকল মামলা এবং তলবের পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা সভাপতি বুধবার থানা থেকে বেরিয়ে জানান, “অন্য কিছুনা, বিজেপি করি বলে কেবলমাত্র হয়রানি করার জন্য এই সকল করা হচ্ছে। তবে তারা যত হয়রানি করাক, অনুমতি না দিলেও আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা সবকিছু জেনে শুনেই বিজেপি করতে এসেছি।”