প্রসব যন্ত্রনায় কাতর প্রসূতিকে হাসপাতালে পৌঁছালেন স্বয়ং OC, কুর্ণিশ নেটিজেনদের

নিজস্ব প্রতিবেদন : লকডাউন চলাকালীন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গণযোগাযোগ মাধ্যম। যে কারণে বহু মানুষকে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। তবে এই সকল অসুবিধা, যেমন অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন পূরণের ক্ষেত্রে নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বীরভূম পুলিশ। যাতে করে যেন জরুরি সেবায় কোনরকম ব্যাঘাত না ঘটে। প্রতিনিয়ত নানান প্রকল্প সাধারণ মানুষদের সামনে এনে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে বীরভূম পুলিশ। আর এই চেষ্টা চালানোর জ্বলন্ত উদাহরণ মিলছে পদে পদে।

এমনই এক ঘটনা ঘটে গত রবিবার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত্রি ৯:১১ মিনিটে হঠাৎ করে মাতৃস্নেহ প্রকল্পের যোগাযোগ নম্বরে ফোন আসে। বন্দনা গড়াই নামে এক আশা কর্মী ওই নম্বরে ফোন করে জানান, লোকপুর থানার অন্তর্গত চুয়াগ্রামের জবা বাউরি নামে এক মহিলা প্রসব যন্ত্রণা বোধ করছেন। আর যে মুহূর্তে অন্য কোন গাড়ি পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে কোনো রকম সময় নষ্ট না করে মাতৃস্নেহের কন্ট্রোলরুম থেকে লোকপুর থানায় ফোন করা হয়। আর লোকপুর থানায় ফোন যেতেই তৎপর হয়ে ওঠে সেখানকার পুলিশ।

লোকপুর থানার ওসি রমেশ সাহা কোনরকম সময় নষ্ট না করে তৎক্ষণাৎ গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যান ওই মহিলার বাড়িতে। সেখান থেকে রাত্রিবেলায় নিজের দায়িত্বে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে ওই মহিলাকে পৌঁছে দেন নাকড়াকোন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। শুধু পৌঁছে দেওয়াই নয়, নিজে স্ট্রেচার ঠেলে রোগীকে পৌঁছে দেন চিকিতসকের কাছে। আর তার কিছুক্ষণ পরেই ওই প্রসূতি মহিলা জন্ম দেন ফুটফুটে এক শিশু কন্যার। পরে ওই মা ও সন্তানকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। বর্তমানে মা ও মেয়ে দুজনেই সুস্থ।

জবা বাউরি যে সময় প্রসব যন্ত্রনায় কাতর হয়ে উঠেছিলেন সে সময় লকডাউনের কারণে কোনো রকম যানবাহন না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি ও তার পরিবার। এরপর ওই পরিবারের মাথায় আসে মাতৃস্নেহের কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করার চিন্তাভাবনা। আর তাতেই সমস্যার সমাধান। বিপদের দিনে এইভাবে পুলিশকে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞ ওই পরিবার। অন্যদিকে লোকপুর থানার ওই পুলিশ অফিসারকে তৎক্ষণাৎ অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কুর্নিশ দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ার নেটিজেনরা।