করোনা মোকাবিলায় নিজেদের বেতন থেকে ২১ লক্ষ টাকা অনুদান বীরভূম পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমান সময়ে গোটা সমাজ এক অভূতপূর্ব সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এই অবস্থায় পুলিশ নিজেদের সামাজিক, আইনি, মানবিক আর প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক। পুলিশ নারী, শিশু এবং সমাজের অবহেলিত শ্রেণীর মানুষদের প্রতি সব সময় সংবেদনশীল। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার পুলিশকর্মী সহনাগরিকদের জন্য একযোগে সাধারণ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে। বীরভূম জেলা পুলিশও তার ব্যতিক্রম নয়।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যখন লকডাউন জারি হয়েছে দিকে দিকে তখন বীরভূম পুলিশ নিজেদের ডিউটি পালনের পাশাপাশি মাতৃ দিবস, নার্স দিবস কিংবা কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী উদযাপনও করে চলেছে। এই বীরভূম পুলিশই পরিস্থিতির বিচারে প্রৌঢ়ার জন্মদিন পালন করছে, এই পুলিশই আরও কয়েকশ বৃদ্ধ মানুষের বাড়িতে সময়ে সময়ে পৌঁছে দিয়েছে তার দরকারি ওষুধ, অত্যাবশ্যক পণ্য ইত্যাদি। দরকারে নিজেদের গাড়িকে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে দিতেও পিছুপা হয়নি।

নিরাপত্তাজনিত বিধি-নিষেধ চলাকালীন জনগণের স্বার্থে কাজের ফাঁকে রক্তদানও করেছেন অসংখ্য পুলিশকর্মী। রাজ্য পুলিশ প্রতিদিনের কাজের অঙ্গ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বরিষ্ঠ নাগরিক, শিশু, সন্তানসম্ভবা মা, খেলোয়াড়, শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর এসবের মাঝেই আরও এক নজির বীরভূম পুলিশের। বীরভূম জেলা পুলিশের প্রত্যেক সদস্য স্বেচ্ছায় তাদের এপ্রিল মাসের দুদিনের বেতন দিয়ে মোট ২১ লক্ষ টাকা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ত্রাণ তহবিলে অনুদান দিলো। মে মাসের ৬ তারিখে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তারা তুলে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের ত্রাণ তহবিলে।

আর এসবের পাশাপাশি বীরভূম জেলা পুলিশ আবারও সহনাগরিকদের অনুরোধ করেছে নিরাপত্তাজনিত বিধিনিষেধের সরকারি নির্দেশ মেনে চলার জন্য। যদি কেউ এই সংক্রান্ত বিধিনিষেধ অমান্য করছে বলে মনে হলে তৎক্ষণাৎ তাদের স্পেশাল কন্ট্রোল রুম নম্বরে জানানোর অনুরোধ করেছে। বীরভূম জেলা পুলিশ ইতিমধ্যে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন মোতাবেক ৮৮ টি মামলা রুজু করেছে এবং ৩৩৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।