মাথামোটা ২ বিজেপি কর্মীর উস্কানিতে পাঁড়ুইয়ে ঝামেলা, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পাল্টা বিজেপি

অমরনাথ দত্ত ও হিমাদ্রি মণ্ডল : বিশ্বজুড়ে যখন মানুষ করোনা থেকে রেহাই পেতে চাইছেন, ঠিক সে সময়ই শনিবার রাতে বীরভূমের সিউড়ির দু’নম্বর ব্লকের বনসংখ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের তালিবপুর গ্রামে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মৃত্যু হয় শেখ শ্যাম নামে বছর ৪৫-এর এক ব্যক্তির। আর এই মৃত্যুর পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। তৃণমূল মৃত ব্যক্তিকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করে এই ঘটনার জন্য বিজেপির উস্কানিকে দায়ী করেছে। অন্যদিকে বিজেপির পাল্টা দাবি এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, “একটা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করাকে কেন্দ্র করে এই লড়াই। গ্রামের কিছু ভাল লোক বলেছিল কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হোক। আর বিজেপির উস্কানিতে কিছু লোক এই কাজে বাধা দিয়েছে। যার পরেই এই অশান্তি। অশান্তির মূলে রয়েছে এলাকার দুই মাথামোটা বিজেপি কর্মী। যে দুজন উস্কানি দেয় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করতে দেওয়া হবে না বলে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি সকলকে অনুরোধ করছি সহযোগিতা করার জন্য। কারণ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা মানেই করোনা রোগীকে সেখানে রাখা নয়। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে তাকেও রাখা হতে পারে। আর সবাই যদি বলে করতে দেব না তাহলে কি করে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে রাজ্য সরকার। তৃণমূল সরকার দারুন ভাবে কাজ করছে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে।”

বিজেপির উস্কানিকে অস্বীকার করে বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল এই ঘটনাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দাবি করে জানান, “বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন বিশ্বের মানুষ খাওয়া দাওয়া ছেড়ে করোনা থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন তখন তালিবপুরে যে ঘটনা ঘটলো তা সবার কাছে লজ্জাজনক। এই ঘটনা আমাদের মাথা হেঁট করে দিয়েছে। এই ঘটনার মূলে রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আপনারা অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞেস করবেন ওই এলাকায় কয়জন বিজেপি কর্মী আছে?”

তিনি এরপর এই অনুব্রত মণ্ডলকে কটাক্ষ করে বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলের এখন জলাতঙ্কের মত অবস্থা। জলাতঙ্ক হলে যেমন খাবার খেতে গেলেও কুকুর দেখতে পাই ঠিক তেমনই অনুব্রত মণ্ডলও শয়নে স্বপনে বিজেপিকে দেখতে পাচ্ছে। এখন তৃণমূলের কালচারই এটা। একটু সুযোগ পেলেই নিজেদের মধ্যে বোমাবাজি, গোলাগুলি শুরু করে দিচ্ছে। আর এক পক্ষ মারছে, অন্যপক্ষ মরছে।”

প্রসঙ্গত, গতকালকের এই ঘটনায় পুলিশ মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। যাদের রবিবার সিউড়ি আদালতে তোলা হয়। আদালতে তুলে পুলিশ তাদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে। আদালত পুলিশের আবেদন মত ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করে।