লাল্টু : দুবরাজপুর ব্লকের ফকিরবেড়া গ্রামের পতিহার ডোম নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিতে শুরু করেছে। জটিলতা বাড়ছে মূলত দাবি পাল্টা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। ওই বিজেপি কর্মীর মৃত্যুকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। স্থানীয়দের বিক্ষোভ, ইট বৃষ্টি এবং পুলিশের কাঁদানে গ্যাসকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই আহত দুজন পুলিশ কর্মী এবং বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী।
তবে এই ঘটনার মোড় নেই মৃত পতিহার ডোমের স্ত্রীর বয়ানে। মৃতের স্ত্রী জয়শ্রী ডোম দুবরাজপুর থানায় দাবি করেছেন, “এলাকার বিজেপি বুথ সভাপতি দুলালের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছিল আমার স্বামীর। আমার স্বামীকে দল থেকে বের করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। এরপর আবার ও (দুলাল) ফোন করে ডাকে। তাই আমি দুলালকেই চিনি, তৃণমূল বা অন্য কাউকে চিনি না। দুলালই খুন করেছে আমার স্বামীকে।”
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি ধ্রুব সাহা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পতিহার ডোমের স্ত্রীর বয়ানের পাল্টা দাবি করেছেন, “তৃণমূল এবং পুলিশ জোট হয়ে উনাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে। তারপর বিজেপির বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে বয়ান দেওয়া করিয়েছে। যেমনটা এর আগেও আমরা অনেকবার দেখেছি। আমরা দেখেছি পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দিলদার শেখের ঘটনা, আমরা দেখেছি নানুরের স্বরূপ গঁড়াই-এর ঘটনা, এমন আরও ভুঁড়িভুঁড়ি উদাহরণ আছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজেপি কর্মীরা খুন হওয়ার পর তাদের পরিবারের সদস্যদের হাইজ্যাক করেছে তৃণমূল এবং বয়ান পাল্টে দেওয়া হয়েছে। সেই একই ঘটনা ঘটেছে এক্ষেত্রেও। আমরা এখানে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছি। আমাদের মৃত কর্মীর পরিবারের দাদা এবং অন্যান্যরা বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর নাম করেছেন এই ঘটনার জন্য।”
আর এই সকল দাবী এবং পাল্টা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা দাবি করেছেন, “তৃণমূল সরকারের পুলিশের দ্বারা এই ঘটনার তদন্ত হলে সঠিক ঘটনা সামনে আসবে না। সেই জন্য আমরা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিবিআই তদন্ত চাইছি অথবা হাইকোর্ট অথবা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত কোন বিচারপতির দ্বারা সিট গঠন করে এই ঘটনার তদন্ত করা হোক। পাশাপাশি ময়না তদন্ত করার সময় যাতে ভিডিও রেকর্ডিং করা হয় তার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে।”
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, “বিজেপির বুথ সভাপতিই ওই বিজেপি কর্মীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। নিজেরাই এই খুনের জন্য দায়ী।”
[aaroporuntag]
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে এখনো ওই বিজেপি কর্মীর মৃতদেহ আটকে রয়েছে ঝাউডাঙ্গাল গ্রামে। তবে বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা আশ্বাস দিয়েছেন, “এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।” অন্যদিকে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে এলাকার বিজেপি বুথ সভাপতি দুলাল এবং তার স্ত্রীকে। তাদের দুজনকে যাতে ছেড়ে দেওয়া হয় তার দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।