নিজস্ব প্রতিবেদন : বাস্তবের কাহিনী নিয়েই সিনেমা রচিত হয়। সিনেমার চাইতে বাস্তব যে অনেক বেশি রোমান্টিক সাম্প্রতিককালে উত্তরপ্রদেশের একটি ঘটনা সে কথাই পুনরায় মনে করিয়ে দিলো। উত্তরপ্রদেশে প্রতাপগড়ে সাম্প্রতিককালে হওয়া একটি বিয়ে মনে করিয়ে দিলো শাহিদ কাপুর আর আমৃতা রাও এর ‘বিবাহ’ সিনেমার কথা।
বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে কনে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার পরও সব কিছু জেনেই তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন পাত্র। হ্যাঁ, উত্তরপ্রদেশের অবধেশ এভাবেই ভালোবাসার নজির গড়লেন।
প্রতাপগড়ের কুন্ডা এলাকার আরতি মৌর্যের সাথে পাশের গ্রামের অবধেশের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ৮ তারিখে। কিন্তু আচমকাই তাদের জীবনে নেমে আসে দুর্যোগ, বিয়ের কয়েক ঘন্টা আগে একটি বাচ্চাকে বাঁচাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন আরতি। শিরদাঁড়া দু’টুকরো হয়ে যায় তার। কোমরে, হাতে গুরুতর আঘাত লাগে।
এই ঘটনার পর তার পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানান আগামী কয়েক মাস আরতিকে বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে। এমনকি পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও খুবই কম।
আরতির এরকম দুর্ঘটনায় তার পরিবারের লোক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তারা তখন আরতির বোনকে বিয়ে করার জন্য অবধেশকে অনুরোধ করেন। কিন্তু সকলকে অবাক করে অবধেশ হাসপাতালে ছুটে যান আরতির কাছে।
তারপর সেখানে গিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে অবধেশ নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। তিনি সকলকে পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে আরতিকেই তিনি বিয়ে করবেন। দরকার পড়লে তিনি হাসপাতালেই আরতিকে বিয়ে করবেন। এরপর তিনি আরতির পাশে থেকে আরতির সেবা শুরু করেন।
আরতি আর অবধেশের বিয়ের জন্য চিকিৎসকরা তখন প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা সমেত আরতিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি পাঠান ঘন্টা দুয়েকের জন্য। এরপর সমস্ত নিয়ম মেনে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পরে আরতিকে আবার হাসপাতালে ফিরে যেতে হয়। অবধেশ ও তার সঙ্গে হাসপাতালে ফিরে যান। এরপর দীর্ঘ আটদিন ধরে স্ত্রীর পাশে থেকে অবধেশ ক্রমাগত সেবা করে চলেছেন। সাধারণ পরিবারের এক ছেলে হয়েও তার উচ্চ মানসিকতা ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য সে সকলের চোখেই সম্মানের স্থান দখল করে নিয়েছে।