নিজস্ব প্রতিবেদন : সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউড সম্পর্কিত অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে চলে আসছে। সুশান্তের মৃত্যুর পরেই বলিউডে নেপোটিজমের তত্ত্ব উঠে এসেছে। বংশগতভাবে যারা ফিল্মের সাথে যুক্ত তারাই বলিউডে ভালো কাজের সুযোগ পান এরকম অভিযোগ উঠে এসেছে বলিউডের অন্দর থেকেই। এই অভিযোগ যে সত্য তার প্রমাণও আছে হাতের নাগালেই। দারুণ অভিনয় করার পরও এমন কিছু অভিনেতা আছেন যারা কখনোই বলিউডের ফেভারিট হয়ে উঠতে পারেননি। যদিও এই সকল অভিনেতাদের ফ্যান ফলোয়ার্স প্রচুর, জনপ্রিয়তাও প্রচুর। তবু বলিউড তাদের আপন করে নেন নি।
বিজয় রাজ : নাটককে ভালোবেসেই বলিউডের জগতে পা বাড়িয়েছিলেন বিজয় রাজ। ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামাতে তার অভিনয় দক্ষতা দেখে নাসিরুদ্দিন শাহ পর্যন্ত মুগ্ধ হয়ে গেছিলেন। এরপর নাসিরউদ্দিন শাহই পরিচালকদের কাছে বিজয় রাজের হয়ে সুপারিশ করেন। বলিউডে পা রাখেন বিজয় রাজ ১৯৯৯ সালে। বলিউডে তার প্রথম অভিনীত ছবি ভোপাল এক্সপ্রেস। এরপর যুবা, ডেলিবেলি, রঘু রোমিও, দিল্লি ৬, পটাখা, গাল্লি বয়, ড্রিম গার্লের মতো ছবিতে তার অসাধারণ অভিনয় নায়কদেরকেও টেক্কা দিয়েছে। কিন্তু বলিউডে তিনি থেকে গেছেন ব্রাত্যই। যোগ্য সম্মান তিনি কখনোই পাননি।বলিউডে কৌতুক অভিনেতার চরিত্র ছাড়া অন্য কোনো চরিত্রে তাকে দেখা যায়নি।
আরশাদ ওয়ারসি : মুন্নাভাই এমবিবিএস ছবিতে তার অভিনয় ভুলবার নয়। কাবুল এক্সপ্রেস, ইশকিয়া, জলি এলএলবি ছবিতেও তার অভিনয় যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি কৌতুক অভিনেতা রূপেই আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। গোলমাল ছাড়া আর বড় বাজেটের কোন মুভিতে দেখা যায়নি আরশাদকে। এরপর আরশাদ ওয়েব সিরিজ করতে শুরু করেন আর তার অভিনয় দক্ষতা সেখানে সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে। আরশাদ অভিনীত অসুরের প্রশংসা সকলেই করেছেন।
রনদীপ হুডা : মন্সুন ওয়েডিং ছবি দিয়েই বলিউড জগতে পা রাখেন রনদীপ। ২০০১ সালে এই ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এরপর বিবি অর গ্যাংস্টার, ম্যায় অউর চার্লস, হাইওয়ে এবং সরবজিতের মতো ছবি করেছেন রণদীপ। এসব ছবিতে তার অভিনয় দক্ষতা অসাধারণ ভাবে ফুটে উঠেছে। কিন্তু ভাগ্য প্রতিকূল তাই এত দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও বলিউডে আজও জায়গা হয়নি তার। এরপর ২০১৬ থেকে দুবছর ধরে রনদীপ নিজেকে তৈরি করেন ‘ব্যাটেল অব সারাগড়ী’ মুভির জন্য।এই মুভির জন্য নিজের চরিত্রকে ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে তিনি নিজের দাড়ি বাড়ান ও মার্শাল আর্ট শেখেন। পরিচালক রাজকুমার সন্তোষী ইশার সিংহের চরিত্রে রণদীপের ফার্স্ট লুক ও প্রকাশ করে দেন। এইবার রণদীপের সকল প্রচেষ্টাই জল ঢেলে দেন কারণ জোহার। ২০১৮ সালে অক্ষয় কুমারকে নিয়ে তিনিও একই প্রেক্ষাপটে কেশরী ছবির ঘোষণা করেন। এই ছবিতে ইশার সিংহের চরিত্রে অক্ষয়কে দেখা যায়। ছবিতে অক্ষয় লুক একদম রণদীপের মত। এরপর স্বাভাবিকভাবেই রণদীপের ছবিটির মুক্তি আটকে যায়!
জিমি শেরগিল : রণদীপের মতোই আর এক যোগ্য অথচ বলিউডে ব্রাত্য অভিনেতা হলেন জিমি শেরগিল। চকলেট হিরো রূপে পরিচিত জিমি ১৯৯৬ সালে মাচিস ছবির মধ্য দিয়ে সর্বপ্রথম বলিউডে আসেন। প্রথম ছবিতেই জিমি প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এরপর মহব্বতে, মুন্নাভাই এমবিবিএস, এ ওয়েডনেস ডে, তনু ওয়েডস মনু, ইয়াহাঁর মত সিনেমাতেও তিনি অভিনয় করেছেন। কিন্তু এতো সিনেমাতে এতো ভালো ভালো অভিনয় করার পরেও বলিউড তাকে সেই ভাবে আপন করে নেয়নি। এমনকি বলিউড তাকে পার্শ্ব চরিত্রে সুযোগ দেওয়াও প্রায়ই বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর বলিউডের প্রতি তিতিবিরক্ত হয়ে পাঞ্জাবি ছবিতে অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে যান এই অভিনেতা।
দিব্যা দত্ত : দিব্যা দত্ত নিজের ক্যারিয়ার জীবনের শুরুর দিকে একবার সালমান খানের নায়িকা হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ‘বীরগতি’ ছবিতে দিব্যা সালমান খানের নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন। কিন্তু এরপর নায়িকা থেকে তিনি পার্শ্বনায়িকার চরিত্রে চলে আসেন। বীরজারা, দিল্লি ৬, ভাগ মিলখা ভাগ এর মতো ছবিতে তিনি তার নিজের অভিনয় দক্ষতা ফুটিয়ে তুলেছেন। সাম্প্রতিক কালের ‘বদলাপুর’ ছবিতে তার অভিনয় সমালোচকদের ও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অসাধারণ এই অভিনেত্রীকে বলিউড পার্শ্ব চরিত্রের বেশি কিছু দেয়নি। এত প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও দিব্যা তাই ব্রাত্য।