লাদাখের ঘটনার জের, একের এক চীনা সংস্থার বরাত বাতিল করলো কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদন : সোমবার রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জল অনেকটা গড়াবে এমনটা আগেই উপলব্ধি করা হয়েছিল। দুই দেশের মধ্যে বিবাদ থাকলেও ১৯৬২ সালের পর এই প্রথম দুই দেশের মধ্যে এমন সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক শুরু হয়েছে। আবার ঠিক একই সময়ে ভারতে উঠেছে নিজেদের আত্মনির্ভর করে তোলার স্লোগান।

চীনা সেনাদের অতর্কিত হানায় ভারতের ২০ জন সেনা জওয়ান শহীদ হওয়ার পর আত্মনির্ভরশীল শ্লোগান আরও জোরদার হয়ে ওঠে। পাশাপাশি সমানতালে উঠতে শুরু করেছে চীনা পণ্য বয়কটের ডাক। দেশের কোটি কোটি মানুষ যখন চীনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন ঠিক তখনই কেন্দ্রও চীনকে ভাতে মারতে নীলনকশা তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে। আর এই নীলনকশা মোতাবেক বুধবার রাতেই কেন্দ্র বিএসএনএলকে ৪জি আপগ্রেড করার জন্য চীনা সামগ্রী আমদানী বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। তবে শুধু বিএসএনএল নয়, চিনা সামগ্রী আমদানিতে আরও একটি বরাত চুক্তি বাতিল করল কেন্দ্র।

৪১৭ কিলোমিটার ফ্রেইট করিডোর বা মালগাড়ির লাইন তৈরীর জন্য বরাত পেয়েছিল চীনের বেজিং ন্যাশনাল রেলওয়ে রিসার্চ এন্ড ডিজাইন সংস্থা বা Dedicated Freight Corridor Corporation of India। ওই সংস্থার সাথে চুক্তি করা হয়েছিল ২০১৬ সালে। ৪৭১ কোটি টাকা দিয়ে এই বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে এই চুক্তি করা হলেও গত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। এই কারণকে সামনে রেখেই রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে এদিন এই চুক্তি বাতিল করা হয়।

লাদাখের ঘটনায় চীনের সংস্থাগুলির সাথে কেবলমাত্র বিএসএনএল অথবা রেলের এই বরাত চুক্তি বাতিল করায় নয়, পাশাপাশি ভারতের ব্যবসায়ী সংগঠন The Confederation of All India Traders বেজিংকে ভাতে মারতে তিন হাজার ধরনের পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে। বিএসএনএল, রেল ছাড়াও সড়কপথে সুরঙ্গ নির্মাণের চুক্তিও বাতিল হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। মোটের উপর বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী গত সোমবারের লাদাখের ঘটনার পর চীন ও চীনের ব্যবসায়ীদের ভাতে মারতে গোটা ভারত উদ্যোগ নিয়েছে।

আর এরই মাঝে ভারতীয়দের জন্য একটি গর্বের খবর এসে পৌঁছেছে। মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠকের পরে সুর হলো নরম চিনের। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এই কথা জানাল বিদেশ মন্ত্রক। তারা জানিয়েছে, মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠক ইতিবাচক। সীমান্তে উত্তেজনা কমানো যায় চিন। দেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। এই মুহূর্তে সীমান্তের পরিস্থিতি স্থিতিশীল। আপাতত কোনও উত্তেজনা নেই। চীনের এই বক্তব্যে ভারতের জয় দেখছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।