দেখে নিন Unlock 2.0-এর নয়া নিয়ম কানুন

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা মহামারী মোকাবিলায় দেশজুড়ে আনলক দ্বিতীয় পর্ব (Unlock 2.0) শুরু হচ্ছে ১লা জুলাই থেকে। প্রথমে লকডাউন, তারপর আনলক ওয়ানের (Unlock 1.0) মাধ্যমে দেশজুড়ে করোনা মোকাবিলার প্রচেষ্টা চালায় কেন্দ্র। যদিও প্রাথমিকভাবে সেই প্রচেষ্টা সাফলমন্ডিত করা যায়নি। এরপর বিপদের ঝুঁকি নিয়েও দেশের অর্থনীতিকে সচল করতে আনলক ১ পর্ব শুরু করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র।

তাতে দেশে করোনা সংক্রামিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৪০ জন। স্বস্তির খবর এই যে এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮২২ জন। মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ৮৯৩ জন। আনলক ১ শেষ হচ্ছে ৩০ জুন। আনলক ২ দেশজুড়ে ১লা জুলাই থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৩১শে জুলাই পর্যন্ত। সেই পর্বে কি কি করা যাবে আর কি করা যাবে না তার নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র।

১. দেশের সমস্ত স্কুল, কলেজ, কোচিংয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আগের মতোই বন্ধ থাকবে। অনলাইন ও ডিস্টেন্স এডুকেশনগুলো চালু রাখা যাবে। এছাড়াও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ১৫ই জুলাই থেকে চালু করা যাবে।

২. মেট্রো রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

৩. কোন আন্তর্জাতিক উড়ান চলবে না। শুধুমাত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে কিছু কিছু বিমান পরিষেবা চালু থাকবে।

৪. করা যাবে না সামাজিক জমায়েত, রাজনৈতিক মিছিল মিটিং, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। বন্ধ রাখতে হবে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের কর্মসূচী।

৫. বদলানো হয়েছে নাইট কার্ফুর সময়সীমা। রাত ১০ থেকে সকাল ৫ পর্যন্ত নাইট কার্ফু জারি থাকবে। বন্ধ রাখতে হবে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক সহ সব ধরনের রাস্তায় বন্ধ থাকবে যাতায়ত ব্যবস্থা।

৬. দেশের যেসব এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলিতে আগের মতোই ৩১শে জুলাই পর্যন্ত লকডাউন চলবে। তবে নতুন এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির।

৭. আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্যের মধ্যে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন চলবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যও চলবে তবে নির্দেশিকা মেনে। এরজন্য প্রয়োজন হবে না আলাদা কোন অনুমতি পত্রের।

৮. শ্রমিক স্পেশ্যাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন পরিষেবা চালু থাকবে। আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা চালু থাকবে এবং বিদেশে আটকে থাকা ভারতীয়দের আনার জন্য ‘বন্দে ভারত’ মিশন জারি থাকবে।

৯. আরোগ্য সেতু অ্যাপ দেশের মানুষ যাতে ব্যবহার করে তারজন্য সচেতনতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের এই অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।

১০. ৬৫ বছরের বেশি প্রবীন মানুষ, অসুস্থ ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা এবং ১০ বছরের নীচে বাচ্চাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১১. বিবাহ অনুষ্ঠানগুলিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ থাকতে পারবে না। মৃত ব্যক্তির সৎকারে সর্বাধিক ২০ জন থাকতে পারবে।

১২. প্রকাশ্য রাস্তায় স্বাস্থ্য সম্মত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থানে থুতু ফেলা যাবে না। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য বা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলি আইন জারি করতে পারবে।

১৩. সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম পদ্ধতিতে কাজ করার উপর জোর দিতে হবে।

১৪. প্রকাশ্য এলাকায় নূন্যতম ৬ ফুট দূরত্ব রেখে সবাইকে চলতে হবে। ব্যবহার করতে হবে মাস্ক ও স্যানিটাইজার।

১৫. সিনেমা হলের মতো বিনোদন কেন্দ্র, সুইমিং পুল, জিমনেসিয়াম, থিয়েটার, বার, অডিটোরিয়াম বন্ধ থাকবে আগের মতোই।

দেশ এখন গভীর সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দেশের মানুষকে সচেতনতা অবলম্বন করে সরকারের নির্দেশ পালন করে চলতে হবে।