কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলের নয়া চিঠিতে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি রাজ্য সরকার

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে আরম্ভ করে কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও বামফ্রন্ট নেতা সুজন চক্রবর্তী সব বিরোধীরাই বারবার দাবি তুলেছেন, এই রাজ্যে করোনা সংক্রামিত ও মৃতের সংখ্যা গোপন করা হচ্ছে। বিরোধীরা বারংবার বলেছেন যে করোনা নিয়ে রাজনীতি করছেন রাজ্য সরকার। নবান্নের বলা সংখ্যার তুলনায় অনেক বেশি মানুষ করোনাতে সংক্রামিত হয়ে মারা গেছেন বলে তাঁদের দাবি।

Advertisements

Advertisements

আমাদের রাজ্যে সাতটি জেলা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত ছিলো‌। আজ হুগলী জেলাকেও রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। রাজ্য সরকার করোনা নিয়ে কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যেই টিম গঠন করেছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব দিল্লির একটি সাংবাদিক বৈঠক বলেন, যে চারটি রাজ্যে আন্তঃমন্ত্রক কমিটি পাঠানো হচ্ছে তা ভাবনা চিন্তা করেই পাঠানো হচ্ছে। এই সমস্ত টিমগুলি পাঠানোর উদ্দেশ্যই হলো, রাজ্যদেরকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে সাহায্য করা। বলাই বাহুল্য পশ্চিমবঙ্গ এই‌ চারটি রাজ্যের মধ্যে একটি রাজ্য।

Advertisements

এর আগে কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও বলেছিলেন করোনা নিয়ে সত্যতা গোপন করতে রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছেন যে কমিটি যাবতীয় সত্যতা গোপন করছে এবং এইভাবে সরকার মানুষের সাথে মিথ্যাচার করছে।এইবার এই কমিটি গঠন নিয়েই প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন রাজ্য সরকার। কেন আর কীসের ভিত্তিতে বাংলাতে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে তার নিয়েই এইবার কৈফিয়ত চাইলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গঠিত আন্তঃমন্ত্রক টিম।

পশ্চিমবঙ্গের সরকার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করতে কেন একটি কমিটির গঠন করেছেন এই ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার কাছে ব্যাখ্যা চাইল ওই আন্তঃমন্ত্রক টিম। বুধবার বিকেলে আন্তঃমন্ত্রক টিমের প্রতিনিধি দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি দীর্ঘ চিঠি পাঠান। দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব। ইনি এই চিঠিতে লেখেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তারা ঠিক কী কী তথ্য চাইছেন এবং কোন কোন জেলা তারা পরিদর্শন করবেন এবং জেলা পরিদর্শনের জন্য তারা রাজ্য সরকারের থেকে ঠিক কী কী সাহায্য চাইছেন। লকডাউন করতে গিয়ে রাজ্য সরকার কোনো রকম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন কিনা, টেস্টিং কিট আর প্রয়োজন কিনা এবং করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের আর কী কী সাহায্য প্রয়োজন কেন্দ্রের থেকে। এই বিষয়গুলিও রাজ্য সরকারের থেকে জানতে চেয়েছেন কেন্দ্রের গঠিত এই টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। এরপরই অপূর্ব বাবু আরও কতকগুলো বিষয় চিঠিতে উত্থাপন করেন এবং এইগুলির বিশদে ব্যাখ্যা চান রাজ্য সরকারের থেকে। এই বিষয়গুলি হলো-

১) রাজ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যায় করোনার টেস্ট করা হচ্ছে কি না?

২) রাজ্যে যেসকল জায়গাতে করোনা টেস্টিং করার ব্যবস্থা আছে সেই জায়গাগুলিতে কি পুরোমাত্রায় টেস্ট করা হচ্ছে?

৩) রাজ্য সরকার টেস্টের জন্য ঠিক কী প্রটোকল নিয়েছেন? এবং কী মাত্রায় এই টেস্টগুলি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে?

৪) স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট, মাস্ক রয়েছে কি না! থাকলেও কত পরিমাণ এ রয়েছে? যে পরিমাণে রয়েছে তা পর্যাপ্ত কি না? কোভিড এবং সাধারণ হাসপাতালগুলিতে‌ ঠিক কত পরিমাণে মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে?

৫) হাসপাতালের পরিষেবা প্রদানের সার্বিক পরিবেশ কেমন অর্থাৎ অক্সিজেন বেড, আইসিইউ বেড, অক্সিজেনের সরবরাহ এবং ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা ঠিক কী পরিমাণ রয়েছে?

৬) হটস্পট ও কনটেইনমেন্ট জোনগুলিতে কীভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে? নজরদারি চালানোর জন্য ঠিক কতগুলি টিম আছে সেখানে? তারা দিনে কত জনের উপর সমীক্ষা করছে?

৭) কলকাতা, হাওড়া, উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে পরিদর্শনের দায়িত্ব অপূর্ব চন্দ্রের উপর, তাই তিনি উপরিউক্ত এই চারটি জেলার কোভিড কেয়ার সেন্টার, কোভিড হেল্থ সেন্টার এবং কোভিড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জিঞ্জাসাবাদ করেন।

৮) স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে কোভিডের সংক্রমণ হয়েছে কিনা? হলেও কাদের কাদের হয়েছে এবং তাদের ক্ষেত্রে ঠিক কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে?

এরপরই কেন্দ্রের গঠিত টিমের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র বাবু সেই মোক্ষম প্রশ্নটি করেন বিরোধীদের বহুদিনের প্রশ্ন।

৯) করোনাভাইরাসে সংক্রামিতদের মৃত্যুর কারণ কীসের ভিত্তিতে একটি কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হচ্ছে? এই বিষয়টিও তিনি জানতে চান।

Advertisements