Mid Day Meal: বৃদ্ধি পাচ্ছে মিড ডে মিলের বরাদ্দ, তাও প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় সরকার

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Mid Day Meal: অবশেষে বরাদ্দ বৃদ্ধি হল মিড ডে মিলের, তাও কেন প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে? কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে ২৭ নভেম্বর, বুধবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিকে মাথাপিছু বরাদ্দ করা হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। আগে ছাত্র প্রতি বরাদ্দ ছিল ছিল ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে যে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ৭৪ পয়সা। পাশাপাশি মাথাপিছু বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের পড়ুয়াদের ৯ টাকা ২৯ পয়সা। আগে এই বরাদ্দ ছিল ৮ টাকা ১৭ পয়সা। এ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মিড ডে মিলে বরাদ্দ বেড়েছে মাত্র ১ টাকা ১২ পয়সা। কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে এই বরাদ্দ ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকেই চালু হয়ে যাবে। কিন্তু রাজ্যের অধিকাংশ শিক্ষামহলের শিক্ষকেরা দাবি জানিয়েছে যে, এই সামান্য টাকায় বাচ্চাদের কোনোভাবেই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো সম্ভব নয়।

Advertisements

ভারত হলো গরিব প্রধান দেশ এবং এই দেশে এখনো পর্যন্ত বহু বাচ্চা ঠিকমত পুষ্টি লাভ করতে পারে না। মিড ডে মিল চালু করার আসল উদ্দেশ্যই হলো বাচ্চাদের বেশি করে স্কুলমুখী করা এবং অপুষ্টির সমস্যার মোকাবিলা করতে সাহায্য করা। মিড ডে মিল প্রকল্পের (Mid Day Meal) দ্বারা প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারির পড়ুয়াদের খাবার দেওয়া হয় স্কুলে। বাচ্চাদের সপ্তাহে কয়দিন এবং কি ধরনের খাবার দেওয়া হবে এ বিষয়ে নির্দেশিকা করে দেওয়া রয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য খরচের একাংশ দেয় কেন্দ্র এবং বাকিটা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।

Advertisements

আরও পড়ুন: শীঘ্রই চালু হবে ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান সাবস্ক্রিপশন’, লাভ হবে ১.৮ কোটি পড়ুয়া-গবেষকের

মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) এই প্রকল্পের টাকা পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে ওড়িশা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলিতে ৬০:৪০ অনুপাতে ভাগ হয়ে থাকে। অর্থাৎ কেন্দ্র দেয় মোট খরচের ৬০ শতাংশ টাকা এবং বাকি ৪০ শতাংশ রাজ্যকে দিতে হয়। এই অনুপাত এর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে। এখানে এই প্রকল্পের ৯০ শতাংশ টাকা দেয় কেন্দ্র। রাজ্য যদি যায় তাহলে বরাদ্দ ৪০ শতাংশের বেশি টাকা দিতে পারে। কোনরকম বিধিনিষেধ এই বিষয়ে জারি করা নেই। যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার মিড ডে মিলে রাজ্যের তরফে বরাদ্দ বাড়িয়েছিল।

Advertisements

আরও পড়ুন: নতুন PAN কার্ড নিতে খরচ এবং সময় কতটা লাগবে জানুন সবিস্তারে

রাজ্যের শিক্ষকমহল দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছে যে, বরাদ্দ বাড়লেও তা যথেষ্ট নয় শিশুদের জন্য। প্রস্তাবিত পুষ্টিকর খাবার এই অল্প টাকায় কোনভাবে শিশুদের দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ প্রতি বছর জিনিসপত্রের দাম যে ভাবে বাড়ছে, সেই হারে বরাদ্দ বাড়ছে না। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলো বরাদ্দ বৃদ্ধির এই নমুনা থেকে আবারও প্রশ্ন তোলে। কেন্দ্রের এই ‘যৎসামান্য’ বৃদ্ধিতে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের বড় অংশই খুশি নন। মিড ডে মিলের (Mid Day Meal) বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের।

শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, বর্তমানে একটি ডিমের দাম হল সাত টাকা সেখানে দাঁড়িয়ে কিভাবে এই যৎসামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করলে চলবে এই শিশুদের? সামান্য টাকায় কোনভাবেই পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই বরাদ্দ ১৬ টাকা এবং ২০ টাকা করা হোক, এমনটাই দাবি জানানো হচ্ছে। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে কোনোভাবেই মিড ডে মিলের বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়নি বিগত কয়েকবছর ধরে। সে তুলনায় বরাদ্দ বৃদ্ধি অতি নগণ্য। বর্তমান বাজারে একটি কাঁচা ডিম সাত টাকার কাছাকাছি। ৬ টাকা ১৯ পয়সা দিয়ে কী ভাবে পুষ্টিকর খাদ্য যোগান দেওয়া যায়। অল ইন্ডিয়া প্রাইস ইনডেক্স (এআইপিআই) অনুযায়ী প্রতি বছর মিড ডে মিলের বরাদ্দ আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, নাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে মিড ডে মিল পরিচালনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা একেবারেই অসম্ভব।

Advertisements