কাজের জায়গায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নয়া নির্দেশিকা জারি করলো কেন্দ্র

Madhab Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : চতুর্থ দফা লকডাউনের পর শুরু হয়েছে পঞ্চম দফা লকডাউন, যাকে কেন্দ্র আনলক-১ বলে আখ্যা দিয়েছে। আর এই পর্যায়ে ধীরে ধীরে খুলছে ধর্মীয় স্থান, খুলতে চলেছে শপিংমল, খুলছে অফিস কাছারি। পাশাপাশি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিবহন ব্যবস্থা। আর এই পরিবহন ব্যবস্থা পুরোদমে শুরু হলেই সরকারি থেকে বেসরকারি অফিসগুলিও চলতে থাকবে পুরোদমেই। আর এহেন অবস্থায় আমাদের আরও সতর্কভাবে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাশাপাশি কাজের জায়গায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে একগুচ্ছ নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকায় কাজের জায়গায় আসতে হলে যা যা পালন করতে হবে তা বলা হয়েছে।

কাজের জায়গায় সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র সরকারের জারি করা নির্দেশিকা

১) নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে কাজের জায়গায় সেই সকল কর্মীরাই আসতে পারবেন যাদের কোনো রকম উপসর্গ নেই। জ্বর অথবা সর্দি কাশি থাকলে অফিসে আসা যাবেনা। কর্মী ছাড়াও অফিসে আসা অন্যান্য ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম লাগু হবে। তবে উপসর্গ না থাকলেই যে অফিসে আসতে পারা যাবে এমনটাও নয়।

২) কনটেনমেন্ট জোনের মধ্যে থাকা কর্মীদের অফিসে বা কাজের জায়গায় আসার ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয়নি। যতদিন না ঐ এলাকা ‘ডিনটিফায়েড’ হচ্ছে ততদিন তাদেরকে বাড়ি থেকেই কাজ করতে হবে।

৩) অফিসের কর্মী হোক অথবা আগন্তুক, সকলের ক্ষেত্রেই ফেস মাস্ক কতবার মুখ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। যদি এমনটা কেউ না করে থাকেন তাহলে তার কাজের জায়গায় প্রবেশাধিকার থাকবে না।

৪) কাজের জায়গা অফিস কাছারি ইত্যাদি জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কর্মীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, কাছাকাছি রাখতে হবে গ্লাভস। ঘনঘন হাত ধুতে হবে অথবা স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। কাজের জায়গায় কোন রকম থুতু ফেলা যাবে না। প্রত্যেক কর্মচারীর স্মার্টফোনে থাকতে হবে আরোগ্য সেতু অ্যাপ। পাশাপাশি থাকতে হবে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত। কম করে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে কর্মীদের অফিসে বসতে হবে।

কাজের জায়গায় বিধি-নিষেধ ছাড়াও বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে হোটেল-রেস্টুরেন্ট শপিংমল ইত্যাদির ক্ষেত্রেও একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে। আর এই সকল নির্দেশিকা লাগু হবে আগামী ৮ই জুন থেকে যেদিন থেকে এগুলি খুলে যাচ্ছে।

১) নির্দেশিকা অনুসারে সংক্রমণ ঠেকাতে হোটেল ও রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কনটেনমেন্ট জোন এলাকায় থাকা কোন হোটেল খোলা যাবে না, খোলা যাবে কেবলমাত্র কনটেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা হোটেলগুলি।

২) রেস্তোরাঁর ক্ষেত্রে উপসর্গহীন কর্মীরাই কাজে যোগ দিতে পারবেন। পাশাপাশি উপসর্গহীন ব্যক্তিরা রেস্তোরাঁতে আসতে পারবেন।

৩) হোটেলে আসা কোন ব্যক্তির ব্যাগ হোটেলের রুমে পাঠানোর আগে তাকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। হোটেলের ঘরে রুম সার্ভিসের ক্ষেত্রে বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব।

৪) রেস্তোরাঁয় রাখতে হবে স্যানিটাইজার, পাশাপাশি থাকতে হবে থার্মাল স্ক্রীনিংয়ের বন্দোবস্ত। সকলের ফেস মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি বজায় থাকতে হবে সামাজিক দূরত্ব। উন্মুক্ত কোন জায়গায় থুতু ফেলা যাবে না।

৫) রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি গ্রাহক প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি সরাসরি গ্রাহকদের হাতে খাবারের প্যাকেট দেওয়া যাবে না। খাবারের হোম ডেলিভারি করানোর আগে কর্মীদের থার্মাল স্ক্রীনিং করে নিতে হবে।

৬) ধর্মীয় স্থানের ক্ষেত্রেও একই রকম নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়েছে নয়া নির্দেশিকায়। যেমন কনটেনমেন্ট জোনের হতে থাকা কোন ধর্মীয় স্থান খোলা যাবে না।ধর্মীয় স্থানে প্রবেশের ক্ষেত্রে মুখ ঢেকে রাখা অথবা ফেস মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। ধর্মীয় স্থানে প্রবেশের দরজায় থার্মাল স্ক্রীনিং ও স্যানিটাইজারের বন্দোবস্ত থাকতে হবে। প্রার্থনা করার ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে নিজস্ব মাদুর অথবা আসন নিয়ে আসতে হবে। কারোর সাথে করমর্দন অথবা আলিঙ্গন করা যাবে না।

এই সকল নির্দেশিকা মেনে চলার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ১০ বছরের নিচের শিশুদের এবং ৬৫ বছরের উর্দ্ধে ব্যক্তিদের যতটা সম্ভব বাড়ি থেকে বের না করা। পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে পরামর্শ মেনে চলার কথা বলা হয়েছে।