Mamata Banerjee : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক অবনতির দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হচ্ছে তা সত্যি নিন্দনীয়। অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরা ভারতে ঢুকে লুটপাট চালাচ্ছে। এমনকি অনেক জায়গাতেই বিএসএফ-কে ভারতীয় ভূখণ্ডেই কাঁটাতারের বেড়া দিতে বাধা দিচ্ছে বিজিবি। এই কঠিন পরিস্থিতিতে বহু বাংলাদেশি জঙ্গি ধরা পড়েছে ভারতে। পাশাপাশি প্রতিদিনই প্রকাশ্যে আসছে জাল পাসপোর্ট চক্র। যত দিন যাচ্ছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ততই জটিল হচ্ছে এই দুই দেশের মধ্যে।
আগে বিএসএফের দিকে আঙুল তুলতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। কিন্তু বর্তমানে সেই চিত্র পরিবর্তিত হয়েছে। এবার মুর্শিদাবাদে গিয়ে বিএসএফকে শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব নিতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এছাড়া কারও প্ররোচনায় যাতে মুর্শিদাবাদের লোকেরা ভুলে না যান সেদিকেও সতর্ক হতে বলেন। মুর্শিদাবাদে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, মুর্শিদাবাদের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করছে বাংলাদেশ। সেই সীমান্ত বিএসএফ যাতে কড়া নিরাপত্তায় পাহারা দেয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলেছে। মুর্শিদাবাদের লোকেরা যাতে কোনোভাবেই কারও প্ররোচনায় পা না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেকের উদ্দেশ্য হল দাঙ্গা লাগিয়ে, দুই দেশের মধ্যে গন্ডগোল বাধিয়ে দেওয়া। সীমান্তে যদি বিএসফ দায়িত্ব নেই, তাহলে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কোনো পরিস্থিতিতেই আইন নিজের হাতে তোলা যাবে না।
চলতি বছরের ১৮ই জানুয়ারি মালদায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশিরা চড়াও হয়েছিল এমনটাই অভিযোগ। তবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল বিএসএফ। কিন্তু মালদার সুকদেবপুরে এখনও পরিস্থিতি থমথমে। সেই কারণে গ্রামবাসীরা যাতে সীমান্তের দিকে না যায় তার জন্য সীমান্তরক্ষীদের আরো কড়া নিরাপত্তা দিতে বলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামবাসীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিএসএফ।
আরও পড়ুন:ICDS Workers: রাজ্য কর্মীদের জন্য বিরাট ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, আশাকর্মীদের মোবাইল দেবে রাজ্য সরকার
সুকদেবপুরবাসীদের অভিযোগ, ইউনুস জমানাতেই বাংলাদেশিরা ভারতের ভূখণ্ডে এসে লুটপাট করে যাচ্ছে। অন্যদিকে পরিস্থিতি যাতে কোনভাবেই হাতের বাইরে না যায় তার জন্য বিএসএফের ১১৯ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা টানা টহল দিয়ে চলেছে সীমান্ত এলাকায়। শুধুমাত্র সুকদেবপুরেই নয় পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের ভগবনগোলাতেও নাকি সম্প্রতি বাংলাদেশিরা সীমান্ত পার করে এসে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ফসল কেটে নিয়ে গিয়েছিল।
বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ জোরকদমে চলছে। বিএসএফ জওয়ানদের কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে প্রচুর সংঘর্ষ সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সীমান্তবর্তী এলাকাতে অসন্তোষ ক্রমশ ছড়িয়ে যাচ্ছে। ১৯৭৫ সালে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী, সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ ভিতরে ‘প্রতিরক্ষা কাঠামো’ তৈরি করা যাবে। এদিকে ২০১০ সালে অবশ্য বাংলাদেশ ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়েছিল যে সীমান্তে ১৫০ গজের ভিতরেও প্রয়োজনে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী কথাটি স্বয়ং স্বীকার করে নিয়েছেন।