রাজ্যে মোট কতজনের কি কারনে মৃত্যু হয়েছে খোলসা করলেন মুখ্য সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা আবহে রাজ্যে মৃত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ বের করতে গত ৩ এপ্রিল রাজ্য সরকারের তরফ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটির কাজ হল বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা। কমিটি গঠনের পর সেই কমিটি তাদের কাজ শুরু করে দেয়। তবে এরপর থেকেই জলঘোলা হতে শুরু করে। বিরোধীরা থেকে কেন্দ্র কমিটি গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। এই কমিটি এখনো পর্যন্ত মোট ৫৭ টি কেস অডিট করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। আর এই ৫৭ জনের মৃত্যু সংক্রান্ত অডিটের কথা শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেন।

রাজ্যে করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রথম থেকেই নানান অভিযোগ তুলতে থাকে বিরোধী দলের নেতারা। তাদের বেশিরভাগ জনের দাবি, রাজ্য সরকার রাজ্যের করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করছে। সঠিকভাবে সংক্রামিত থেকে মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করছে না। এমনকি রাজ্যের করোনা সংক্রামিত ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রথম থেকেই দ্বন্দ্ব শুরু হয় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের। রাজ্য সরকারের দাবি, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেন্দ্র সরকার তাদের সংখ্যাকে বার বার চ্যালেঞ্জ করছে। একইভাবে এদিন মুখ্য সচিব জানান, রাজ্য সরকারের সমস্ত হিসাব একেবারে স্বচ্ছ। কারচুপির কোন জায়গা নেই।

মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে জানান, শুক্রবার রাজ্যে নতুন করে ৫১ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ জনই হাওড়ার বাসিন্দা। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনা অ্যাক্টিভ ৩৮৫ জন। এখনো পর্যন্ত মোট ১০৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে ১১৫৭৬ জনকে। এখনো পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ২৬৭১৬ জন।

৫৭ জনের অডিট প্রসঙ্গে মুখ্য সচিব জানান, তাদের কমিটি ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুকে ‘কোভিড পজিটিভটা ইন্সিডেন্টাল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে কমিটির রিপোর্টে। আর এই ১৮ জনের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অর্থাৎ নবান্নের এক্সপার্ট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী মৃত ৩৯ জনের শরীরে করোনা থাকলেও তাদের মৃত্যু হয়েছে কিডনির অসুখ, মাল্টিঅর্গান ফেলিওর, লিউকোমিয়া, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ইত্যাদির কারণে।

তবে এমন রিপোর্ট এতদিন পর প্রকাশের কারণ হিসাবে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, “নবান্নের তরফ থেকে গঠন করা এক্সপার্ট কমিটির কাছে অনেকদিন ধরেই আমরা সম্পূর্ণ রিপোর্ট চাইছিলাম। ঘটনাচক্রে সেই রিপোর্ট আজ আমার হাতে আসায় তা প্রকাশ করা হলো।”