নিজস্ব প্রতিবেদন : দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের সাথে চীনের সীমান্ত এলাকা নিয়ে বিবাদ রয়েছে। তবে এই বিবাদ থাকলেও তা রক্তক্ষয়ী মাত্রা সেভাবে নিতে দেখা যায়নি। শেষবার দেখা গিয়েছিল ৫৮ বছর আগে। আর তারপর আবার ১৫ই জুন রাতে। ১৫ই জুন রাতে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় নিজেদের আধিপত্য দেখানো নিয়ে দুই দেশের সেনা সংঘাতে শহীদ হন ভারতের ২০ জন সেনা। তবে শুধু ভারতীয় সেনারা শহীদ হয়েছেন এমনটা, প্রাণ হারিয়েছে চীনা সেনারাও। আর বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্র থেকে ফুটে উঠছে কিভাবে চীন তার আগ্রাসন নীতি নিয়ে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা দখলের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আর চীনের এই আগ্রাসন নীতি নিয়েই এবার ভারতকে সতর্ক করল তিব্বত। জানানো হয় শুধু লাদাখ নয়, চীনের টার্গেট হাতের পাঁচটি আঙুল অর্থাৎ পাঁচটি এলাকা। যার সূত্রপাত হলো লাদাখ।
সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রেসিডেন্ট লোবসাং সাঙ্গে খুবই দায়িত্ব সহকারে ভারতকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, “চীনের মাস্টার প্ল্যানের একটি অংশ হলো লাদাখ। চীন গোটা হাত দখল করতে নেমেছে আর এই আগ্রাসন নীতির একটি আঙ্গুল হলো লাদাখ। ফাইভ ফিঙ্গার স্ট্রাটেজি মেনে চীন তার কার্যকলাপ চালাচ্ছে।”
চীনের লক্ষ্যে থাকা পাঁচটি এলাকা কি কি
‘পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না’-র প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুং পাঁচ আঙ্গুলের যুদ্ধনীতি চালু করেছিলেন। সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রেসিডেন্ট লোবসাং সাঙ্গে এই নীতির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, “মাও সে তুং এবং চীনের অন্যান্য নেতারা তিব্বতকে হাতের তালু মনে করতেন। যে কারণে তা দখল করতেই হতো চীনকে। আর সেই টার্গেট মতো তারা তিব্বত দখল করে। এরপর হাতের পাঁচটা আঙুলের মতো বাকি এলাকা দখল করে নিজেদের অধিকারের পরিসীমা বাড়াতে হবে এই পরিকল্পনা নিয়ে চলছে।” অর্থাৎ তিব্বত যদি হাতের তালু হয় তাহলে সেই হাতের ৫টা আঙ্গুল হলো লাদাখ, নেপাল, ভুটান, সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ। এই পাঁচটি এলাকা অর্থাৎ পাঁচটি আঙ্গুল চীনের টার্গেটে রয়েছে বলে মনে করছেন সেন্ট্রাল তিব্বত অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রেসিডেন্ট লোবসাং সাঙ্গে।
১৯৬২ সালে ভারতের সাথে চীনের শেষ বড় মাপের যুদ্ধ হয়। বর্তমানে তারা মুখে আলোচনার কথা বললেও লাদাখ দখলে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। যে কারণেই দীর্ঘ ৫৮ বছর পর সোমবার রাতে চীনা সেনাদের এমন ব্যবহার। এছাড়াও ২০১৭ সালের ডোকলাম সংঘাত এই ফাইভ ফিঙ্গার স্ট্রাটেজির অংশ বলেই মনে করছেন তিব্বত প্রধান। এছাড়াও তিনি ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন তিব্বতের সাথে যা হয়েছে তা দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের বলে।