Palace of Purulia: পুরুলিয়ার এই রাজবাড়ী তৈরি করেছিলেন চীনের রাজমিস্ত্রিরা, কাজ হয়েছিল ১২ বছর ধরে

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

Chinese masons built this palace of Purulia for 12 years: ভারতীয় পর্যটন কেন্দ্র গুলির মধ্যে অন্যতম পুরুলিয়া। পশ্চিমবঙ্গের এই লাল মাটির জেলা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। লাল মাটি, সবুজের সমারহ, একাধিক পাহাড় ও টিলায় ঘেরা এই জেলা পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে। দু-তিন দিনের ছুটি কাটানোর জন্য বহু পর্যটক বেছে নেন পুরুলিয়াকে। পুরুলিয়ার আয়ের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে এখানকার পর্যটন শিল্প। পুরুলিয়া অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। যুগ যুগ ধরে সেইসব ঘটনার প্রমাণ স্বরূপ বেশ কিছু নিদর্শন বহন করে চলেছে এই জেলা। আজকের প্রতিবেদনে এমন কিছু ঐতিহাসিক নিদর্শন (Palace of Purulia) সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

Advertisements

পুরুলিয়া নামটা শুনলেই সবার প্রথম যে দুটো জিনিস মনে হয় তা হলো, অযোধ্যা পাহাড় আর ছৌ নাচ। পুরুলিয়ার সংস্কৃতি ছৌ নাচের জন্য বিখ্যাত। ছৌ নাচের পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত হয় এক ধরনের মুখোশ। পুরুলিয়া চরিদা গ্রাম এই মুখোশগুলি তৈরি করার মূল কেন্দ্র। গোটা গ্রামের কয়েকশো মানুষ শুধুমাত্র মুখোশ তৈরি করেই সংসার চালান। আজ প্রকৃতি বা সংস্কৃতি নয়, কথা হবে পুরুলিয়ার স্থাপত্য নিয়ে। অযোধ্যা পাহাড়, ছৌ নাচ, শিমুল পলাশে ঘেরা ছোট ছোট টিলা এসব কিছুর মাঝে অনেক ইতিহাস বুকে নিয়ে বহু যুগ ধরে স্বমহিমায় বিরাজ করছে কাশিপুর রাজবাড়ি (Palace of Purulia)। পুরুলিয়ার পঞ্চকোট রাজবংশের রাজত্বকালের প্রধান নিদর্শন এই রাজবাড়ি।

Advertisements

প্রায় ২ হাজার বছরের পুরনো পুরুলিয়ার কাশিপুর রাজবাড়ি। পঞ্চকোট রাজবংশের রাজা ছিলেন নীলমনী সিংহ দেও। তার নাতি পঞ্চকোট রাজবংশের অন্যতম উত্তরাধিকারী জ্যোতি প্রকাশ সিং দেও এই রাজবাড়ির গঠনগত পরিবর্তন করেন ১৯১৬ সালে। তাই ২ হাজার বছরের রাজত্বকালে একাধিক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছৈ কাশীপুর রাজবাড়ী (Palace of Purulia)। রাজবাড়ীর এই বিরাট পরিবর্তন তার মধ্যে অন্যতম। জ্যোতি প্রকাশ্ দেও রাজবড়ি সংস্করণের জন্য চীন থেকে মিস্ত্রি নিয়ে আসেন। নতুন করে এই রাজ্যোতির সংস্কার করার কাজ চলে ১২ বছর ধরে। শুধু তাই নয় বেলজিয়াম থেকে একটি বিরাট আয়তনের ঝার লন্ঠন নিয়ে আসা হয় রাজবাড়ীতে ব্যবহারের জন্য। সংস্কারের পর পঞ্চকোট রাজবংশের নিদর্শন কাশিপুর রাজবাড়ি এক অন্যরূপে প্রকাশ্যে আসে।

Advertisements

আরও পড়ুন ? Tarakeswar to Bishnupur Train: কতদূর এগোলো তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর রেল লাইনের কাজ! মেগা আপডেট দিল পূর্ব রেল

২০০০ বছর আগে পুরুলিয়ার বুকে যে রাজত্ব শুরু হয়েছিল পঞ্চকোট রাজবংশের হাত ধরে, সেই রাজত্ব এখন আর নেই। পঞ্চকোট রাজবংশের রাজত্বকাল ছিল প্রায় ৭২ বছর। বর্তমানে রাজা বা রাজত্ব কোন কিছুই আর নেই। শুধু একাধিক স্মৃতি বুকে নিয়ে রয়ে গেছে কাশিপুর রাজবাড়ি। এই রাজবংশের কোন সদস্যই এখন আর রাজবাড়িতে থাকেন না শুধুমাত্র বর্তমান রাজকুমারী ছাড়া। বর্তমানে কাশিপুর রাজবাড়ির (Palace of Purulia) সমস্ত দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন পঞ্চকোট রাজবংশের বর্তমান রাজকুমারী।

পুরুলিয়ায় ঘুরতে গেলে বেশিরভাগ পর্যটকই একবার হলেও ঘুরে আসেন কাশিপুর রাজবাড়ি থেকে। এই রাজবাড়ি পুরুলিয়ার অন্যতম ঐতিহ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কাশিপুর রাজবাড়ি সারা বছর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকে না, বছরের নির্দিষ্ট একটি সময় এই রাজবাড়ীর দ্বার উন্মুক্ত হয় সকলের জন্য। প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় কাশিপুর রাজবাড়ি খুলে দেওয়া হয় সকলের জন্য। রাজবাড়ির পুজো উপভোগ করা এবং রাজবাড়ি ঘুরে দেখতে চাইলে সেই সময়টি একদম উপযুক্ত। দূর্গা পূজার ৫ দিন ছাড়া অন্য কোন সময় রাজবাড়ি (Palace of Purulia) দেখতে চাইলে বাইরে থেকেই দর্শন করে ফিরে আসতে হয় পর্যটকদের।

Advertisements