নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বের কাছে নতুন দিগন্ত হিসাবে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) নতুন রেকর্ড তৈরি করল। মাত্র ৬১৫ কোটি টাকার এই মিশনে ভারতের মহাকাশযান চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এত টাকা খরচ করে চাঁদের মাটিতে যন্ত্র নামিয়ে কেবলমাত্র চাঁদের মাটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা, জলের খোঁজ চালানো! অনেকের কাছেই এই বিষয়টি একেবারে ছেলেখেলা মনে হলেও এই চন্দ্রযান সফল হওয়ায় ভারতের সাধারণ নাগরিকরা ৪টি দিক দিয়ে উপকৃত হবেন।
১) চন্দ্রযান ৩ এর রোভার চাঁদের মাটিতে ১৪ দিন ধরে যে গবেষণা চালাবে তার পরিপ্রেক্ষিতে বহু কিছুই স্পষ্ট হয়ে যাবে। যেমন বহু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন চাঁদে জল রয়েছে, রয়েছে ইউরেনিয়াম, প্ল্যাটিনাম সোনা সহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ সম্পদ। নতুন এই গবেষণার ফলে এই সকল বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক নতুন নতুন ধারণা আসবে এবং সাধারণ মানুষের সামনে চাঁদ এবং মহাকাশ নিয়ে অনেক বিষয় উন্মুক্ত হবে।
২) ভাবতে অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য হলেও চন্দ্রযান তিনের সাফল্য সরাসরি প্রভাব ফেলবে ভারতের অর্থনীতিতে। যেমন প্রাইভেট স্পেস সেক্টরে ভারতের আধিপত্য বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে মহাকাশ প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলির চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এই চাহিদা বৃদ্ধি পেলেই বাড়তে থাকবে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং বিদেশি বিনিয়োগ।
৩) দেশের প্রচুর সংস্থা রয়েছে যেগুলি মহাকাশ বিজ্ঞান খাতের সঙ্গে যুক্ত। গোদরেজ অ্যারোস্পেস, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এলএন্ডটি), হিমসন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিরামিকস ইত্যাদি এই সকল বেসরকারি সংস্থা চন্দ্রযান ৩ মিশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এই সকল সংস্থার তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম এই মিশনে ব্যবহৃত হয়েছে। এই মিশন সফল হওয়ার ফলে এই সকল সংস্থার শেয়ার বৃদ্ধি পাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
৪) উত্তর ভারতে অবস্থিত ISRO-র একমাত্র আঞ্চলিক অ্যাকাডেমিক সেন্টার ফর স্পেস-এর প্রধান এবং NIT কুরুক্ষেত্রের গবেষণা ও উন্নয়নের ডিন অধ্যাপক ডঃ ব্রহ্মজিৎ সিং কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভারত কৃষিপ্রধান দেশ এবং চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যকে কৃষি ক্ষেত্রে সাফল্য হিসাবে দেখা উচিত। কারণ মহাকাশে ভারত যত শক্তিশালী হবে, ততই কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ সুবিধা আসবে। বর্তমানে মাটি পরীক্ষা করে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ইত্যাদির কাজ চলছে। এআই-এমএল এখন মাটি পরীক্ষায়ও ব্যবহার করা হচ্ছে, যা দেশের কৃষিক্ষেত্রের অগ্রগতির সঙ্গে সংযুক্ত। এছাড়াও তিনি দাবি করেছেন, চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি ও জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্য দেবে। যার পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে কৃষিক্ষেত্রে।