নিজস্ব প্রতিবেদন : একই শরীরে যুক্ত দু’জন। তাদের রয়েছে দুটি আলাদা আলাদা হৃদয়, হাত রয়েছে আলাদা, কিডনি, স্পাইনাল কর্ডও রয়েছে আলাদা। কিন্তু তারা একটি লিভার দিয়েই কাজ চালান। লিভার ছাড়াও তারা ভাগাভাগি ভাবে কাজ চালান গল ব্লাডার আর দুই পা। এই ভাবেই বিপুল প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে তাদের কেটে গিয়েছে ১৯টা বছর।
শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নয়, এর পাশাপাশি দুজনের শরীর একসঙ্গে জুড়ে থাকা এবং শারীরিক গঠনের জন্য বিভিন্ন সময়ে তাদের অবহেলা, লাঞ্ছনা বঞ্চনার মত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এবার এই দুই ভাই সোহনা আর মোহনার ভাগ্য ফিরলো। কারণ জুটেছে সরকারি চাকরি। এমন প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে এই জয় অদম্য লড়াইয়েরই ফল বলে জানিয়েছেন তারা।
পাঞ্জাবের ১৯ বছর বয়সী সোহনা পঞ্জাব বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডে চাকরি পেয়েছেন। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে সে কাজ শুরু করেছে। আর তার কাজ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে দপ্তরে পৌঁছে যাচ্ছেন তার ভাই মোহনা। দুজনে মিলে একসঙ্গে দেখভাল করছেন বিদ্যুৎ নিগমের বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশের।
পঞ্জাব স্টেট পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডের সাবস্টেশন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র রবীন্দর কুমার জানিয়েছেন, “সোহনা ও মোহনা এখানে আমাদের বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশের দেখভাল করছেন। সোহনা এখানে চাকরি পেয়েছেন। সেই সঙ্গে মোহনাও আমাদের কাজে সাহায্য করেন। সোহনা-মোহনার এই কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। সেই কারণেই তাঁদের কাজে নেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে পেরে খুশি এই দুই জন সোহনা ও মোহনা। তারা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “আমরা এই কাজ পেয়ে খুব খুশি। আমরা পাঞ্জাব সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে যে স্কুলে আমরা পড়াশুনো করেছি, যাঁরা আমাদের এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে, সেই পিঙ্গলওয়াড়া ইনস্টিটিউশনের প্রতিও আমরা কৃতজ্ঞ।”
Sohna-Mohna help us look after the electrical appliances here. Punjab govt has hired them. Sohna got the job & Mohna helps alongside. They have work experience as well: Ravinder Kumar, substation Jr Engineer, PSPCL pic.twitter.com/XEfmUsb4zE
— ANI (@ANI) December 23, 2021
জানা যাচ্ছে, সোহানা এবং মোহনা জন্মগ্রহণের পর তাদের বাবা-মা তাদের দায়িত্ব নিতে চাননি। পরবর্তীতে তাদের নিয়ে আসা হয় দিল্লির এইমসে। তবে সেখানে তাদের পৃথকীকরণ করার জন্য অপারেশন করার মতো ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকেরা। কারণ এই অপারেশন প্রাণঘাতী হতে পারে বলে তারা মনে করেছিলেন। তারপর থেকেই দু’জনে একে অপরের ছায়াসঙ্গী হয়ে বড় হয়ে ওঠেন।