নিজস্ব প্রতিবেদন : বোলপুরের শান্তিনিকেতন (Birbhum News) কাঁপানো টোটোওয়ালা হলেন সুকেশ চক্রবর্তী। তিনি আবার এলাকায় ঠাকুর নামে পরিচিত আর তার টোটো পরিচিত ঠাকুরের টোটো (Thakurer Toto)। যাত্রী পরিষেবার থেকেও সুকেশ চক্রবর্তী এবং তার টোটো অন্য একটি কারণে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বীরভূম তথা রাজ্যে। সেই কারণটি হল ‘সত্য বাণী’। অন্ততপক্ষে এমনটাই মনে করেন সুকেশ চক্রবর্তী এবং স্থানীয়দের একাংশ।
কেননা এই সুকেশ চক্রবর্তী হামেশাই তার টোটোতে কোন না কোন পোস্টার লাগান আর সেই সকল পোস্টারে ফুটে ওঠে নির্ভীক সব বাণী, যে সকল বাণী রাজ্যের শাসকদলের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে। কখনো তার পোস্টারে দেখা গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অর্পিতা এবং তাদের শান্তিনিকেতনে থাকা ‘অপা’র প্রসঙ্গ, আবার কখনো পোস্টারে বোলপুর তথা বীরভূমেরই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে নানান কটাক্ষ। কিন্তু এবার একেবারেই ভিন্ন ধরনের পোস্টার দেখা গেল ঠাকুরের টোটোয়।
ঠাকুরের টোটোর পোষ্টারে অধিকাংশ সময়ই লক্ষ্য করা গিয়েছে, শাসক দলের বিরুদ্ধে কড়া কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে। কিন্তু এবার একেবারেই ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল তার টোটোর এই পোস্টারে। তার টোটোর পোস্টারে এবার শাসকদলেরই এক নেতার প্রশংসা ফুটে উঠেছে, যদিও সঙ্গে সঙ্গে ফুটে উঠেছে আর এক নেতার নিন্দা। শাসক দলের এই দুজন হলেন কাজল শেখ এবং অনুব্রত মণ্ডল। পোস্টারে সুকেশ চক্রবর্তী কাজল শেখের ভূয়সী প্রশংসা করে তাকে সৎ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টকে অসৎ বলে ধুয়ে দিয়েছেন।
পোস্টারটিতে মূলত তুলে ধরা হয়েছে সৎভাবে কাজ করলে মানুষ কি পেতে পারেন। তার সেই পাওয়া দেরি হলেও তা কখনোই খারাপ হয় না। ঠিক যেমনটা পেয়েছেন কাজল শেখ। অন্যদিকে অনুব্রতর প্রসঙ্গ তুলে পোস্টারে উল্লেখ করা হয়েছে, অসৎ পথে চললে শেষমেষ মানুষের জায়গা কোথায় হয়। এক্ষেত্রে তিনি অনুব্রত মণ্ডলের তিহার যাত্রার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন।
সবসময়ই তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলা সুকেশ চক্রবর্তী হঠাৎ কেন এইভাবে তৃণমূল নেতা তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন? এর কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, কাজল শেখ এবং তার পরিবার বহু বছর ধরেই তৃণমূল করে আসছে। এমনকি তাদের এইভাবে দল করার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারের অনেককেই শহীদ হতে হয়েছে। তবে এসবের পরেও সৎ ভাবে চলার কারণেই আজ তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের এমন পদ পেয়েছেন।