ভারতে বাদুড়ের শরীরে মিললো করোনা, গবেষণার রিপোর্টে বলছে ICMR

নিজস্ব প্রতিবেদন : গোটা বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টিকারী একটি মারণ ভাইরাস হলো করোনা ভাইরাস। পুরো বিশ্বে লক্ষাধিকের বেশি মৃত এই ভাইরাসের কবলে। এই এক করোনা‌ ভাইরাসই পৃথিবীকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এই মারণ ভাইরাসের বাহক‌কে নিয়ে আগেও একটা জোর গুঞ্জন উঠৈছিলো। তখন বৈজ্ঞানিকরা একটি আভাস মাত্র দিয়েছিলেন নভেল করোনার বাহক বাদুড় হতে পারে বলে! বিজ্ঞানীদের চাঞ্চল্যকর কথা অনুযায়ী ৬৬ রকম ভাইরাসের বাহক হচ্ছে বাদুড়।

আমরা সকলেই জানি যে ২০০১ সালের নিপা ভাইরাসের বাহক ছিলো ফল খাওয়া বাদুড়। ভারতে তখন এই ভাইরাসের ফলে সংক্রামিত হয়েছিলো ৬৬, মৃতের সংখ্যা ছিলো ৫০ এর কাছাকাছি। এমনকি ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসের বাহকও বাদুড়ই ছিলো। আর এই সার্স ভাইরাসের সাথে সাদৃশ্য আছে সার্স-কভ-২ ভাইরাসের। তাই এক্ষেত্রেও বাদুড়কেই Reservoir বলে অনুমান করা হচ্ছে।

সর্বভারতীয় নানান সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি ভারতীয় সংস্থা ICMR একটি রিপোর্ট বের করেন। তাদের প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে তারা উল্লেখ করেছে বাদুড়ের কথা। হ্যাঁ, ভারতের দুই প্রজাতির বাদুড়ের মাঝেই বিটা-করোনাভাইরাসের প্রাণনাশকারী ভাইরাল স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে। ইন্ডিয়ান ফ্লাইং ফক্স আর ফল খাওয়া বাদুড় যারা তাদের শরীরে মিলেছে INA ভাইরাস।

ICMR ও পুণের NIV‌ এই ভাইরাসের উৎস খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলো। গবেষকরা এই পরীক্ষাটি করতে কেরল, তামিলনাড়ু, হিমাচলপ্রদেশ ও পুদুচেরীর বিভিন্ন জায়গা থেকে দুই রকম প্রজাতির বাদুড় সংগ্রহ করেন। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে চলে পরীক্ষা।

গবেষকরা এই পরীক্ষার শেষে জানান দুই প্রজাতিরই ২৫টি বাদুড়ের গলা থেকে RTPCR এর খোঁজ মিলেছে। জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চে এই গবেষণার ফল প্রকাশ হয়েছে। করোনাভাইরাসের Reservoir এই দুই প্রজাতির বাদুড় হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কিন্তু বাদুড়ের থেকে এই ভাইরাস কি মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে? এই বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। এই বিষয়টি নিয়েই গবেষকরা ধন্দে রয়েছেন। আসলে অনেকেই হয়ত জানেন না যে বাদুড়ের প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব বেশি! লক্ষণহীন সংক্রমণ ঘটায় এরকম ভাইরাসও বাদুড়ের শরীরে সহজেই বাসা বাঁধে।তাই করোনা ভাইরাসের মারণ থাবার পিছনে বাদুড়ের ভূমিকা পালন ভয়াবহ রকমের থাকলেও তা এতটুকুও আশ্চর্যজনক নয়।