কবে বিদায় নেবে করোনা, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিলেন সময়

নিজস্ব প্রতিবেদন : বর্তমানে প্রতিদিন দেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ভারতে আক্রান্তদের সংখ্যা বর্তমানে আড়াই লক্ষের কাছাকাছি। অদূর ভবিষ্যতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কাও দেখা যাচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা ভেবে শুরু হয়েছে আনলক করার পালা। মানুষ এখন করোনা ভাইরাসকে সাথে নিয়েই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু করছে।

এই পরিস্থিতিতে আরও ব্যপক হারে বাড়ছে আক্রান্তদের সংখ্যা। দেশবাসী যেন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলছে। সবারই একটাই প্রশ্ন, কবে দেশে শেষ হবে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ? এই পরিস্থিতিতে ভারত কবে নাগাদ করোনা মুক্ত হতে পারে তা হিসেব কষে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দুই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।

এই তথ্য দিয়েছেন ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব হেলথ সার্ভিসেস (Directorate General of Health Services)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর ডঃ অনিল কুমার এবং ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর রূপালী রায়। বেইলির গাণিতিক মডেল (Bailey’s mathematical model) কাজে লাগিয়ে রীতিমতো অঙ্ক কষে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই দুই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় দেশ করোনার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবে।

গাণিতিক নিয়ম অনুসারে ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ তখনই কমা শুরু করবে যখন ভারতে আক্রান্তদের সংখ্যা এবং সুস্থতার সংখ্যা একই হারে এগোবে। এই পরিস্থিতি ভারতে আসতে আসতে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় লাগবে। এক্ষেত্রে মহামারীর বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন ডঃ কুমার এবং রূপালী রায়।

প্রথমে ভারতে সংক্রমণের মূল উৎস ছিল বিদেশ থেকে ভারতে আসা মানুষজন। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বর্তমানে ভারতে ছড়িয়ে পরা সংক্রমণের মূল উৎস ভারতের সংক্রমিত মানুষেরাই। আক্রান্তের গাণিতিক চক্র থেকে সংক্রমিত ব্যক্তিদের বাইরে রাখতে হবে যার জন্য প্রয়োজন সুস্থ্যতার সংখ্যা বৃদ্ধি। মৃতের সংখ্যা ও সুস্থতার সংখ্যার চক্র থেকে সংক্রমিতদের আলাদা করলেই দেশ জুড়ে সুস্থতার হার বাড়ানো যাবে এবং একমাত্র তাহলেই দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমানো যাবে।

বর্তমান করোনা অবস্থা সামলাতে হলে কেন্দ্র রাজ্য এক হয়ে নানান গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে দেশকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।তবে শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই হবেনা, সাধারণ জনগণের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতা ছড়াতে হবে যাতে কোনোভাবেই কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ায়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ নজর দিতে হবে সুস্থ্যতার হার বৃদ্ধির দিকে, অর্থাৎ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি করতে হবে।

এর আগে সিঙ্গাপুর ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি অ্যান্ড ডিজাইনের গবেষকরা জানিয়েছিলেন, পৃথিবীর কোন দেশ কবে নাগাদ সম্পূর্ণ করোনা মুক্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাঁরাও করোনা আক্রান্ত আর এই ভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে করা একটি সমীক্ষার রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে গবেষণা চালিয়েছিলেন। তবে কোনও হিসেব বা পর্যবেক্ষণ আর গণনা তখনই মিলবে, যখন সব রকম সাবধানতা, সামাজিক দূরত্ব, যথাযথ চিকিৎসা পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে। না হলে এই তারিখ পরিবর্তিত হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞের।