নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা অতিমারি চলাকালীন দেশজুড়ে লকডাউন জারি হওয়ার পর বন্ধ ছিল মদের দোকান। এরপর ধীরে ধীরে তা খোলার অনুমতি দেওয়া হলেও মদ কেনার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অতিরিক্ত ৩০% কর দিতে হতো করোনা কর হিসাবে। তবে এবার রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর মিলেছে খুব তাড়াতাড়ি এই কর তুলে নেওয়া হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে হয়তো আগামী মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকেই উঠে যাবে এই কর। যে কারণে এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে মদের দাম। যা অবশ্যই সুরা প্রেমীদের কাছে সুখবর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মদ নিয়ে এই করোনা আবহেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানান ছবি ধরা পড়েছে। মার্চ মাসে দেশে লকডাউন জারি হওয়ার পর সমস্ত দোকান বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয় মদের দোকানও। এরপর লকডাউনের তৃতীয় পর্যায়ে ধীরে ধীরে মদের দোকান খোলার অনুমতি দেয় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। আর এই দোকান খোলার অনুমতি নেই মদের দোকানের সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ে সুরা প্রেমীদের। যা নিয়ে তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা দেশ। আর ঠিক এই সময়ে দিল্লি সরকার মদের উপর ৭০% অতিরিক্ত কর বসায়। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও ৩০% অতিরিক্ত কর বসায়। তবে তার পরেও খামতি পড়েনি মদের দোকানে লাইন এর। তবে দীর্ঘদিন ধরে মদের দোকান বন্ধ থাকার কারণে এই খামতি না থাকলেও পরবর্তীকালে পরিস্থিতির বদল ঘটে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থাৎ আনলক পর্যায়ে বহু গ্রাহকদের মধ্যে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মদ কেনার প্রতি অনীহা জন্মেছে। এর পিছনে রয়েছে বেশ কতকগুলি কারণ। যেমন প্রথমত বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের হাতেই কিছুটা হলেও আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছে। আর এই আর্থিক অনটনের মাঝে সংসার খরচ চালানোর পাশাপাশি নেশার জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে আগ্রহী নন অনেকেই। আবার দ্বিতীয় কারণ হিসাবে লক্ষ্য করা গেছে, আনলক পর্যায়ে বেশিরভাগ মানুষ কাজে যোগ দেওয়ায় মদ পানের মতো অতিরিক্ত সময়ও কমেছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই মদের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।
অন্যদিকে তথ্য বলছে রাজ্য সরকারের আয়ের বড় উৎস হল মদ বিক্রি থেকে আসা কর। যে কারণে লকডাউন চলাকালীন মদের দোকান বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্বের ক্ষেত্রে বিপুল ক্ষতি হচ্ছিল। পরে মদের দোকান খোলা এবং কোভিড ট্যাক্স যোগ হওয়ায় আয়ের উৎস অনেকটাই বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে পুনরায় মদ বিক্রির পরিমাণ কমে যাওয়ায় ফের আয়ের উৎস ধাক্কা খাচ্ছে। যে কারণে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত ৩০% কোভিড ট্যাক্স তুলে দেওয়ার। আর এই অতিরিক্ত কর তুলে দিয়েই রাজ্য সরকার নতুন করে রাজকোষ ভরাতে চাইছে।