লাল্টু : বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম কোনটি তা এখন প্রায় অধিকাংশ মানুষই জানেন। বিশ্বের বহু মূল্যবান ওই আমটি হল মিয়াজাকি (Miyazaki Mango)। এই আমের গল্প অনেকে শুনে থাকলেও চাক্ষুষ করা অথবা খেয়ে দেখার সুযোগ খুব কম মানুষেরই হয়েছে। তবে এবার এই বহু মূল্যবান আম মিলবে বীরভূমেই (Birbhum)। ভাবছেন কোথায় পাবেন? রয়েছে আপনার হাতের কাছেই।
বীরভূমের কোথায় এমন বহু মূল্যবান আম পাবেন তা জানার আগে এই আমের জন্ম এবং বিশেষত্ব সম্পর্কে আগেই জেনে নেওয়া যাক। মিয়াজাকি আসলে জাপানিজ আম। এই ধরনের আম প্রথম চাষ করা হয় জাপানে। এর আরেক নাম সূর্যের ডিম। এর আবার জাপানি নাম হলো তাইয়ো-নো-তামাগো। মিয়াজাকি আমের রং রুবি পাথরের মত লাল। এই ধরনের আম বিরল প্রজাতির হওয়ার কারণে এদের দাম আড়াই লক্ষ টাকা থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এই বিরল প্রজাতির আম প্রথম ফলতে দেখা গিয়েছিল জাপানের কিউশু প্রদেশের মিয়াজাকি শহরে। এরপর থেকেই এই শহরের নাম অনুসারে এই আমের নামকরণ করা হয়েছে। আমগুলির গড় ওজন হয়ে থাকে ৩৫০ গ্রাম। প্রচন্ড মিষ্টি হয়ে থাকে এই ধরনের আম। এতে মিষ্টির পরিমাণ থাকে ১৫ শতাংশ বা তার বেশি। ভারতের মতো বাজারে এই ধরনের আম প্রতি পিস ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। এই আমের প্রচুর গুনাগুন রয়েছে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটা-ক্যারোটিন ও ফলিক আ্যাসিড। এই ধরনের আম চোখের ক্লান্তি দূর করে, দৃষ্টিশক্তিকে আরও জোরালো করে। এর চাষ শুরু হয় ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে অথবা ১৯৮০ সালের প্রথমদিকে। দীর্ঘ সময় ধরে থাকা সূর্যের রশ্মি এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি এই ধরনের আম ফলনের ক্ষেত্রে উপযোগী।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি এমন আম এবার চাষ করা হচ্ছে বীরভূমের দুবরাজপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুরের বনকাটিপাড়ার গওসিয়া মসজিদে। গওসিয়া মসজিদের সভাপতি কাজী আবু তালেব জানান, “সৈয়দ নিজামুদ্দিন ওরফে সোনা নামে আমাদের পাড়ার এক যুবক বছর দুয়েক আগে এই আম গাছের চারা এনে লাগিয়েছিলেন মসজিদে। তিনি একবছর আগে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু তিনি কোথা থেকে এই আম গাছের চারা এনেছিলেন কেউ জানেন না। আগে এই আমের প্রজাতির কথা কেউ না জানলেও এবছর গাছে আম ধরতেই বিরল প্রজাতির এই আমের কথা জানতে পারেন সকলে। আর যা দেখতে ইসলামপুরের গওসিয়া মসজিদে ভিড় জমাচ্ছেন দুবরাজপুরের সাধারণ মানুষজন।”
এখনও পর্যন্ত ৮-১০ টি আম ধরেছে এই গাছে। মসজিদ কমিটির তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরে শুধুমাত্র একটি আম পাড়া হবে এবং সেই আমটি বিক্রির জন্য দরপত্র ডাকা হবে।