নিজস্ব প্রতিবেদন : বাঙালিরা ধান চিনতে কখনো ভুল করেন না। কেননা বাঙালিরা প্রধান খাবার হিসাবে ভাতই খেয়ে থাকেন। বাংলার বুকে যে সকল ধান চাষ (Costly Paddy Cultivation) হয় তার মধ্যে যেমন রয়েছে সাধারণ নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের পেটে অন্ন জোটানোর মতো কম দামি ধান, ঠিক সেই রকমই আবার রয়েছে বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি লাভ করা নানান ধরনের দামি ধানও। তবে এসবের মধ্যেই এবার এমন কিছু ধানের চাষ হচ্ছে যেগুলির দাম ২৫০ টাকা কিলো।
এমন দামি ধান যে জায়গায় ফলানো হচ্ছে সেই জায়গায় আবার রয়েছে নানান প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা। তবে সেই সকল প্রাকৃতিক প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়েই বিঘা বিঘা জমিতে এই ধরনের দামি দামি ধান ফলানোর কাজ চালানো হচ্ছে। ২৮ রকমের এই ধরনের নামিদামি ধানের চাষ এখন চলছে বাংলার বুকে। যে সকল ধান ফলানো কষ্ট হলেও একবার বললেই চাষীরা মালামাল।
এমন দামি সুগন্ধি ধান চাষ করা হচ্ছে সুন্দরবনের মতো প্রাকৃতিক প্রতিকূল এলাকায়। যেখানে এমন অসাধ্য সাধন করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট বায়োডাইভারসিটি বোর্ড। এমন দামি ধান ফলানোর জন্য প্রথম কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। সেই সময় মাত্র ২-৩ বিঘা জমিতে নোনা সহনশীল জৈব ধানের চাষ শুরু হয়। এরপর সাফল্য আসতেই জমির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে এবং এখন আট হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে।
এই বিপুল পরিমাণ জমিতে যে পরিমাণ অর্গানিক ধানের চাষ করা হচ্ছে তার মধ্যে বেশ কিছু ধান সুগন্ধি। সেই সকল ধান বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা কিলো দরে। এই ধান থেকে ফলা চালের কোনটি কালো, কোনটি বেগুনি, কোনোটি আবার লালচে। তবে সব ধানেরই দাম পাওয়া যাচ্ছে বিপুল পরিমাণে। এই ধরনের দামি সুগন্ধি চাল এখন চাষ হচ্ছে সুন্দরবনের গোসাবার টিটলিঘেরা, শান্তিগাছি এবং কুলতলির মইপীঠ গ্রামে। বাকি পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির চাষিরাও এই ধরনের চাষের জন্য এখন আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় যে সকল সুগন্ধি ধান ফলানো হচ্ছে সেই সকল সুগন্ধি ধানের তালিকা লম্বা। ২৮ রকমের সুগন্ধি ধান পরীক্ষামূলকভাবে চাষের কাজ চলছে। যে ২৮ রকম সুগন্ধি ধানের মধ্যে রয়েছে মরিশাল, মেঘনা, মাছকন্যা, বিরহী, কলাবতী, খণ্ডগিরি, লাল জোয়ারি, দোপানা, তুলাইপাঞ্জি, খেজুর ছড়ি, হরিণ খুরি, নাগেশ্বরী, তুলসীমুকুল, নরসিংহের মত ধানও। আর এই সকল দামি ধানের কারণে এলাকার চাষিরা অনেকটাই উপকৃত। কেননা ইতিমধ্যেই এই সকল ধান বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন এলাকার চাষীরা।