credit goes to a Bengali gentleman for the inclusion of a toilet in the train on Indian Railways: ভারতবর্ষের লাইফ লাইন বলা হয় রেল পরিবহনকে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছতে জনসাধারণ ট্রেন পথকে বেছে নেন। এতে খরচ খরচা যেমন কমায় তেমনি ভ্রমণ হয় আরামদায়ক। পাশাপাশি ট্রেনের পরিবহন ব্যবস্থাও ভালো হয়। বিশেষ করে দূরপাল্লার ট্রেনগুলি। এই ট্রেনের প্রতি কামড়াতেই ব্যবস্থা থাকে টয়লেটের। তবে জানলে অবাক হবেন ট্রেনে এই টয়লেটের প্ল্যানিং কিন্তু ব্রিটিশদের নয়। এক ও একমাত্র বাঙালির জন্যই বর্তমানে দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে টয়লেট (Train Toilet) ব্যবস্থা রয়েছে। আজকের প্রবন্ধে সেই টয়লেট তৈরির ঘটনায় জানানো হয়েছে। দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ট্রেনে এই টয়লেট তৈরির প্রসঙ্গ এলো?
আজকের নয়, ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয় দূরপাল্লার ট্রেনে বাথরুম। তবে ট্রেনে এই টয়লেট (Train Toilet) তৈরির ঘটনাটা ঘটে ১৯০৯ সালে। যিনি বা যে ব্যক্তির ট্রেনে টয়লেট তৈরিতে অবদান রয়েছে তিনি হলেন জনৈক অখিল চন্দ্র সেন। সেই সময় একদিন কোনো কাজের সূত্রে বাড়ি থেকে রেলগাড়িতে করে রওনা দেন অখিল বাবু। বাড়ি থেকে ভালো-মন্দ খেয়েই বেরোন তিনি। সাথে খান কাঁঠাল। কিন্তু ট্রেনে উঠেই তৈরি হয় সমস্যা। শুরু হয় পেট গুরগুর। কিন্তু ট্রেনে নেই ওয়াশরুম। ফলেই পরের স্টেশন পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই তার।
এদিকে পেটে চাপ পড়ায় অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয় অখিল বাবুর। কোথাও কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ধুতি নষ্ট হয়ে যায় যায়। এমতাবস্থায় অনেক কষ্টে নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করেন অখিল চন্দ্র। এমন সময় ট্রেন এসে পৌঁছায় মহারাষ্ট্রের আহমেদপুর স্টেশনে। ট্রেন দাঁড়ানোর সাথে সাথেই গার্ডেদের বলেই পড়ি কি মরি করে ধুতি গুটিয়ে লোটা হাতে নিয়ে ছোটে শৌচালয়ের দিকে। এদিকে স্টেশনের বাথরুমে গিয়ে পেট হালকা হতে না হতেই ট্রেন ছাড়া হুইসেল দেয় গার্ড। হুইসেল শোনার সাথে সাথেই শরীর পুরোপুরি হালকা না করেই ট্রেন ধরার জন্য এক হাতে ধুতি আর এক হাতে লোটা ধরে দৌড় দেন অখিল বাবু।
এদিকে ধুতি, জিনিসপত্র ধরে ছুটতে গিয়ে প্ল্যাটফর্মের ওপর পড়ে যান অখিল বাবু। ধুতি খুলে প্ল্যাটফর্ম ভর্তি লোকের সামনে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন তিনি। তারপর আবার গন্তব্যের মাঝপথে ট্রেন হারিয়ে ফেলেন তিনি। ফলে চরম পর্যায়ে ক্ষেপে যান অখিল চন্দ্র সেন। রেগে গিয়ে ভুলভাল ইংরেজিতে চিঠি লিখে সাহেবগঞ্জ ডিভিশনাল রেলওয়ে অফিসে জমা করেন তিনি। যে চিঠিতে বলেছেন, বাড়ি থেকে অতিরিক্ত কাঁঠাল খেয়ে আসার ফলে রেলগাড়িতে তার পেট ফেঁপে ছিল। স্টেশনে তিনি টয়লেটে গিয়েছিলেন। তবে টয়লেট যাওয়ার পথে তিনি গার্ডদের বলেও গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন ? Vande Bharat New Timetable: বদলে গেল হাওড়া রাঁচি বন্দে ভারতের সময়সূচি! না জানলে মিস হবে ট্রেন
কিন্তু গার্ডেরা তাকে গুরুত্ব না দিয়েই ট্রেন ছেড়ে দেয়। অপরদিকে ট্রেন ধরতে গিয়ে স্টেশনে বহু প্যাসেঞ্জারদের সামনে তাকে হেনস্থা হতে হয়। গার্ডদের এইরূপ ভুলের জন্য তিনি গার্ডদের জরিমানা করার দাবি করেন। তা না হলে তিনি হুমকি দেন সংবাদমাধ্যমে এই খবর ফাঁস করে দেওয়ার।
পরবর্তীতে অখিল চন্দ্র সেনের (Rail Toilet) এই চিঠিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় ব্রিটিশ সরকার। তারপর তার সেই চিঠির ভিত্তিতেই দূরপাল্লার ট্রেনে বাথরুম তৈরির প্রচলন হয়। রেলের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয় অখিল বাবুর এই চিঠিকে। এখনো যত্ন সহকারে দিল্লির রেল মিউজিয়ামে সেই চিঠি রেখে দেওয়া আছে।