নিজস্ব প্রতিবেদন : এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় রোদ ঝলমলে দিনের দেখা মিললেও আচমকাই বদলে যাবে আকাশের রূপ। হাওয়া অফিসের তরফ থেকে এমনই সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে। হাতে মাত্র আর কয়েকটা ঘণ্টা, তার পরেই এই রূপ পরিবর্তন দেখবেন বাংলার মানুষেরা।
হাওয়া অফিসের তরফ থেকে শেষ পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদই বঙ্গোপসাগরের ওপর অবস্থান করা নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ের রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এর প্রভাবেই শনিবার এবং রবিবার দুর্যোগ ঘনঘটার মধ্য দিয়ে যাবে বাংলা। পরিস্থিতি প্রতিকুল দেখে ইতিমধ্যেই হাওয়া অফিসের তরফ থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব-মধ্য বঙ্গপোসাগরে শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দক্ষিণ-পূর্ব, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এই নিম্নচাপটি বর্তমানে ঘন্টায় ৩৬ কিলোমিটার গতিবেগে এগিয়ে চলেছে। অনুমান করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাবে।
এখনো পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে তাতে মনে করা হচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার এই ঘূর্ণিঝড় পৌঁছে যেতে পারে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উড়িষ্যা উপকূলে। সেখান থেকেই এর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর এর অভিমুখ হতে পারে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে। স্থলভাগের আছড়ে পড়ার সময় এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে ঝড়ো হাওয়া।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে হাওয়া অফিসের তরফ থেকে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে বলে অনুমান। যে সকল জেলার ওপর এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে সেই সকল জেলাগুলি হল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হুগলি, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং মালদা।
পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ইতিমধ্যেই দীঘা থানার তরফ থেকে সমুদ্র সৈকত এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী এবং পর্যটকদের মাইকিং করে সতর্কবার্তা দেওয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই এই মাইকিং করে সতর্কতা বার্তা দেওয়ার কাজ চলছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসের কথা জানিয়ে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা এবং সমুদ্র সৈকত বন্ধ থাকার কথা পুলিশের তরফ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।