Deal of 200 Passenger Carriage completed between India and Bangladesh: সোমবার রাজধানীর রেলওয়ে ভবনে একটু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রেল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক সার্ভিস লিমিটেডের সঙ্গে এই চুক্তি সম্পন্ন হয় বাংলাদেশ রেলওয়ের। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রডগেজ লাইনের জন্য ২০০ যাত্রীবাহী বগি (Passenger Carriage Deal) কেনা। শত্রু অনুসারে জানা গেছে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার জন্য ব্যয় হতে পারে ১ হাজার ২৯৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৯ টাকা (ডলার ১১৬ টাকা ৭১ পয়সা)।
এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রেলপথমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী, ভারতীয় কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহুল মিত্তাল, ভারতীয় রেলওয়ের প্রোডাকশন ইউনিটের অতিরিক্ত সদস্য সঞ্জয় কুমার পংকজ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব করপোরেশন মিচেল ক্রেজা ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা। ভারতীয় রেলওয়ে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের আগে বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সবথেকে বড় সমস্যা হলো ক্যারেজের সমস্যা। এই মুহূর্তে ভারত থেকে যে ২০০ ব্রডগেজ ক্যারেজ (Passenger Carraige Deal) আসছে তার জন্য তারা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তিনি এ বিষয়ে আরো বলেছেন যে, প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ (Passenger Carriage Deal) কখন সরবরাহ করা হবে সেই সময়টা অবশ্যই চুক্তিতে উল্লেখ করতে হবে। উল্লেখ থাকলে জানতে সুবিধা হয় যে কোন সময়ের মধ্যে প্যাসেঞ্জার ক্যারেজগুলো সরবরাহ করা হবে। জরুরি ভিত্তিতে রেলওয়ের ক্যারেজ দরকার। প্যাসেঞ্জার ক্যারেজের এতটাই সমস্যা যে দুটো সেট যদি আগামী দুই মাসের মধ্যে দেওয়া যায়, তাহলে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে। বাকিগুলো পরে দিলেও চলবে।
এই চুক্তি অনুষ্ঠানে রেলসচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ অংশের সঙ্গে রেলের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। যারফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের জেলাগুলোর যোগাযোগ আগের থেকে অনেকটাই উন্নত হয়েছে। প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ (Passenger Carriage Deal) রেল-যোগাযোগকে আগের থেকে আরো অনেক বেশি উন্নত করতে সাহায্য করবে। রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, রেলের প্রধান উদ্দেশ্য হল যোগাযোগ পরিধি বাড়ানো, দেশের বিভিন্ন জায়গার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা এবং উন্নত মানের যাত্রীসেবা দেওয়া। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সবকটি উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়ে যাবে।
সূত্র মারফত জানা যায় যে, এই প্রকল্পের সময় ১ জুলাই ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২৬। বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। প্রতিটি বগির দাম হবে ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এই খরচ প্রদান করবে ইআইবি, যা ম্যাটেরিয়াল চার্জ। ভারত থেকে বাংলাদেশে প্যাসেঞ্জার ক্যারেজগুলো (Passenger Carriage Deal) আসার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে তা খালাস করতে হবে। সেটি বাবদ ৩৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রায় ৩০৩ কোটি টাকা দিতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে।
আশা করা যাচ্ছে চুক্তি অনুযায়ী ২০ মাসের পর থেকে বগি দেওয়া শুরু হবে, এবং এই প্রক্রিয়া চলবে প্রায় ৩৬ মাস। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল, ক্যারেজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যাত্রীদের আধুনিক, নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা প্রদান, যাত্রী চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন রুটে রেল পরিচালনা, পুরোনো ও আয়ুষ্কাল শেষ হওয়া যাত্রী ক্যারেজগুলো প্রতিস্থাপন এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা।
রেলওয়ের বক্তব্য অনুসারে প্যাসেঞ্জার ক্যারেজগুলো সাধারণত হবে স্টেইনলেস স্টিলের, দ্রুত গতি সম্পন্ন, বগির ছাদে এসি থাকবে, অটোমেটিক এয়ার ব্রেক পদ্ধতি ও পরিবেশবান্ধব হবে। সমস্ত উন্নতমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এই বগিগুলো তৈরি করতে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হবে এই বগিগুলোকে (Passenger Carriage Deal)। বাংলাদেশ রেলওয়ের বক্তব্য সারা দেশে তাদের রেলওয়ে ব্যবস্থা চালু থাকলেও তারা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে এই জায়গায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ রেলওয়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প দ্রুততার সাথে শেষের দিকে এগিয়ে চলেছে। তবে এ প্রকল্প দুটি পরিপূর্ণভাবে শেষ হলে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে।