পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে উদ্যোগের পাশাপাশি দাবি উঠছে বিশেষ ট্রেনের

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনাভাইরাস বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। আর এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার জন্য বিশ্বের অধিকাংশ অংশেই এখন জারি রয়েছে লকডাউন। ঠিক তেমনই ভারতেও লকডাউন জারি হয়েছে গত মার্চ মাস থেকে। দেখতে দেখতে লকডাউন একমাস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু আশার আলো সেভাবে চোখে পড়ছে না। আর এই লকডাউন চলাকালীন অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছেন দীন দরিদ্র মানুষেরা।

দীন দরিদ্র মানুষদের পাশাপাশি আরও অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চিকিৎসা করাতে যাওয়া মানুষদের। পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা একটু হলেও বেশি। কারণ তারা পরিবার-পরিজন ছেড়ে অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে কাজের উপর নির্ভর করে জীবন যাপন করেন। যে কারণে তাদেরকেই বারংবার দেখা গেছে ঘরমুখো হতে, আর ঘরমুখো হওয়ার জন্য লকডাউনের নিয়ম ভাঙতে। আর এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্যই বিশেষ ট্রেনের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে।

পরিযায়ী এই শ্রমিকদের সমস্যার কথা ভেবে বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনার বন্দোবস্ত চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করেছে, রাজ্যের বাইরে থাকা শ্রমিকদের তারা নিজেদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনবে। সূত্রের খবর, বিশেষ ট্রেনের মাধ্যমে এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর বন্দোবস্ত শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট বাসে করে পরিযায়ী শ্রমিকদের রেল স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে এই বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব বালাসাহেব ঠাকরে অন্য রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের দাবি তুলে বারবার সরব হয়েছেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং রেল মন্ত্রককের কাছে এপ্রিল মাসের মধ্যেই নির্দেশিকা জারি করার আবেদন জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানিয়েছেন, “প্রায় ৬ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মহারাষ্ট্র সরকার থাকার খাবার এবং চিকিৎসার বন্দোবস্ত করেছে। এমত অবস্থায় তাদের পরিবার ছেড়ে দূরে থাকাটা অত্যন্ত কষ্টকর। যদি কেন্দ্রীয় সরকার এপ্রিলের ৩০ থেকে মে ১৫-র মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করে তাহলে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে এপ্রিলের শেষে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে হাতে থাকা সময়ের সদ্ব্যবহার করা উচিত।”

এসবের ভিত্তিতে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, রেলওয়ে সার্ভিস আধিকারিকরা তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ‘ফেসিলেটিং মাইগ্রেন্টস ট্রাভেল’ নামে একটি খসড়া তৈরি করেছে। তারপরেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ভারতীয় রেলওয়ে পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেবে বলেও জানা গিয়েছে। আর এই বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত হলে কোন রাজ্যে যাওয়া হবে তার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হবে স্টপেজ। আর যদিও এমন ট্রেনের বন্দোবস্ত হয় সেক্ষেত্রেও পরিকল্পনা মাফিক সংক্রামিত এলাকা ও রেড জোন এড়িয়েই এই ট্রেন চলাচল করবে বলেও সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। তবে এখন দেখার বিষয় আগামীদিনে কি হচ্ছে।