লাল্টু মুখার্জি : দু’দিনের জ্বরে (Unknown Fever in Birbhum) প্রাণ হারালো ৩ বছর ৮ মাসের এক শিশু। ওই শিশুর এইভাবে প্রাণ হারানোকে কেন্দ্র করে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বীরভূমে। অধিকাংশ বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ডেঙ্গু থাবা বসালো না তো? বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি।
অজানা জ্বরে দু’দিনের মধ্যেই শিশু মৃত্যুর এমন ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুর পৌরসভার অন্তর্গত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা সোমনাথ মন্ডলের পুত্র সন্তান অরিত্র মন্ডল অজানা জ্বরে গত বুধবার মারা যায়। ওই পরিবারের আরো দুজন, মৃত ওই শিশুর মা ও দাদা জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণে নানান ধরনের সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। এমন ঘটনার খবর চাউর হতেই বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার একটি মেডিকেল টিম গিয়ে তাদের দুজনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে আনে।
জানা গিয়েছে, অরিত্র নামে ওই শিশুটি যেদিন মারা যায় তার আগের দিন তার জ্বর এসেছিল। তারপর তার চিকিৎসা শুরু করা হয় স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে। পরদিন সকালবেলায় ওই শিশুকে তুলে পাঠানোর জন্য সমস্ত কিছু তৈরি রেখেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। স্কুল যাওয়ার মুহূর্তেই ফের জ্বর আসার কারণে আর স্কুলে পাঠানো হয়নি। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় ওই শিশু ও চৈতন্য হয়ে পড়েছেন এবং তারপর তাকে হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল পাঠানো হলেও শেষ রক্ষা করা যায়নি।
মৃত শিশুর দাদু সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘জ্বরের পাশাপাশি বমি, পায়খানা এবং মাথাব্যথা ছিল। আরিত্রর দাদার জ্বর বেশি থাকার কারণে তাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অরিত্রর মায়েরও জ্বর রয়েছে।’ ওই পরিবারের তিন সদস্য জোরে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি এলাকায় আরো বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত বলে জানা যাচ্ছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এলাকার আরো আট জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
যদিও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আরি জানিয়েছেন, “ডেঙ্গু বলে তো আমাদের কাছে কোন খবর নেই। কেননা ঐ শিশুর কোন পরীক্ষা হয়নি। তবে আমাদের তরফ থেকে জ্বর হলে যা যা করণীয় সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই শিশুর বিষয়ে যদি আগে জানা যেত তাহলে সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হতো। তবে ওই ওয়ার্ডে এখন ডেঙ্গুর কোন রোগী নেই।”
পরিসংখ্যান বলছে গত বছর বীরভূমে ৭০০-র কাছাকাছি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই বছর জানুয়ারি মাস থেকে এখনো পর্যন্ত ৫৫ জন আক্রান্ত। তবে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আরি জানিয়েছেন, ‘সবাই সুস্থ কারো কোন অসুবিধা নেই।’