নিজস্ব প্রতিবেদন : এখনও অবধি ভারতের সেরা অধিনায়কের তকমা পাওয়া মহেন্দ্র সিং ধোনির চিন্তাভাবনা যে অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্রতার প্রমাণ তার কাজকর্মের মধ্যে দিয়েই পাওয়া গেছে। বিশ্বকাপের সময় বিশেষ ফৌজি চিহ্নের গ্লাভস ব্যবহার করা থেকে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে না গিয়ে কর্নেল হিসেবে সীমান্ত ডিউটি করা। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ধোনির এই সকল কাজকর্মই তাকে অন্য সকল ক্রিকেটার অধিনায়কদের থেকে আলাদা করেছে।
সম্প্রতি নতুন একটি সিদ্ধান্ত আবারও মানুষজনকে চমকে দিলো। ক্রিকেটার ধোনি, অধিনায়ক ধোনি, কর্নেল ধোনির পর এবার ধোনির একটি সম্পূর্ণ অন্য রূপ দেখতে পেলেন তার ভক্তরা।
ভারতের জনপ্রিয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন। আগামী বছর প্রিমিয়ার লিগের আগে আর ক্রিকেটের ময়দানে দেখা যাবে না তাকে। হাতে দীর্ঘ সময়! এই দীর্ঘ সময় মহেন্দ্র সিং ধোনি যেভাবে কাজে লাগাবার কথা ভেবেছেন তা আবারও প্রমাণ করলো যে মহেন্দ্র সিং ধোনির ধ্যানধারণা ও জীবনযাপনের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যদের থেকে আলাদা।
এই দীর্ঘ সময়ে মহেন্দ্র সিং ধোনি ব্যবসা করতে চান। তাও যে সে ব্যবসা নয় তিনি পোল্ট্রির ব্যবসায় নামতে চলেছেন। পোল্ট্রি ফার্ম খোলার চেষ্টায় ইতিমধ্যেই ২০০০ কড়কনাথ মুরগির অর্ডার দিয়ে দিয়েছেন তিনি। নিজের রাঁচির ফার্ম হাউসেই পোল্ট্রি ফার্ম খুলবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ধোনির জৈব চাষে উৎসাহ থাকার দরুন এর আগে ধোনি সবজি চাষ করেছেন। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন এই মুরগির খামার।
বিরল প্রজাতির এই কড়কনাথ মুরগি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই মুরগির মাংস খেলে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে না। কারণ এতে কোলেস্টরলের মাত্রা খুবই কম। এর পাশাপাশি এই মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। উপরন্তু এই মুরগির মাংস খেলে ফ্যাট ও খুব একটা বৃদ্ধি হয় না। কারণ অন্যান্য প্রজাতির মুরগির মাংসের তুলনায় এই মুরগির মাংসতে অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। কড়কনাথ মুরগি মাংসতে ১.৯৪ শতাংশ ফ্যাট রয়েছে। বিরল প্রজাতির এই মুরগি পেশীর ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্যান্সার প্রতিরোধে ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এই মুরগির মাংস ও হাড়ের রং সবটাই কালো রং এর হওয়াই অনেকেই এই মুরগির মাংস পছন্দ করেন না।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বিরল প্রজাতির এই মুরগির মাংস খাওয়ার উপকারিতার কথা বারবার বলেছেন। কিন্তু এই মুরগি সচরাচর খুব একটা দেখা যায় না বলে মানুষের কাছে এই মুরগি সহজলভ্য নয়। তাই ধোনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি এই মুরগিই ফার্মে রাখবেন। সেই অনুযায়ী তিনি অর্ডার ও দিয়েছেন। আইপিএল থেকে দেশে ফেরার পরই তিনি এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন। মধ্যপ্রদেশ ঝাবুয়ার কড়কনাথ মুরগি ভারত বিখ্যাত। তাই ধোনি তার এক বন্ধুর মাধ্যমে ঝাবুয়ার কড়কনাথ মুর্গ রিসার্চ সেন্টারের অধিকর্তা আইএস তোমারের সাথে কথা বলেন।
এপ্রসঙ্গে কড়কনাথ মুর্গ রিসার্চ সেন্টারের অধিকর্তা আইএস তোমার বলেছেন, “মহেন্দ্র সিং ধোনি বন্ধুদের মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেই সময় ডেলিভারি দেওয়া তার পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। এর পরে থান্ডালার চাষীদের সঙ্গে ধোনিকে যোগাযোগ করতে বলা হয়।”
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই অর্ডার অনুযায়ী ধোনির রাঁচির ফার্ম হাউসে কড়কনাথ মুরগি পৌঁছে যাবে। তারপর খেলার মাঠের অধিনায়ক ব্যবসাতেও ছক্কা হাঁকালেন কিনা সেটা ভবিষ্যৎ বলবে!