খুশির খবর : ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদনের সময়সীমা বাড়লো

গৌড় চক্রবর্তী : ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হল৷ যাদের কোনো ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই তাদের নতুন রেশন কার্ডের জন্য আবেদন ও ডিজিটাল রেশন কার্ডের সংশোধনের জন্য যে ক্যাম্প সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দপ্তরে বা ব্লক অফিসে চলছিল সেই সময়সীমা বাড়ানো হল।

এদিকে পূর্ব ঘোষিত সূচী অনুযায়ী চলতি মাসের ২৭ তারিখ পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়া হবে। ছুটির দিন বাদে বাকি দিনগুলিতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ চলছে। যে কাজ এ মাসের ৯ তারিখ শুরু হয়েছিল। আবারও নভেম্বর মাসে শুরু হবে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন ও সংশোধনের কাজ৷ ৫ ই নভেম্বর থেকে ৩০ শে নভেম্বর পর্যন্ত এই ক্যাম্প চলবে৷ যেহেতু এ মাসের ২৮ তারিখ মহালয়া। তারপরের দিন রবিবার, সরকারি ছুটি। তারপর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে পুজোর সপ্তাহ। তাই ৪ই নভেম্বর পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে এবং ৫ ই নভেম্বর থেকেই আবারও আবেদন পত্র জমা নেওয়া হবে।

এনআরসি আতঙ্ক মানুষকে যেভাবে তাড়া করছে তাতে রেশন কার্ডের ক্যাম্পে প্রতিদিন লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ভিড়ে পরিস্থিতি এমনই যে অনেকেই আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়ে লাইন দেখে ঘুরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী গতকাল পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য ২৭ তারিখ পর্যন্ত যে সময়সীমা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত করা হচ্ছে। অনেক সময় রয়েছে, করে নিন সময়মতো।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, “দরকার হলে রেশন কার্ড সংশোধনের জন্য শিবির বাড়ানো হোক।” পাশাপাশি প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুটো ভাগে রেশন কার্ড করা হোক। অনেকে রেশন কার্ড রাখেন, অস্তিত্বের জন্য, ঠিকানার জন্য, কিন্তু তিনি রেশন তোলেন না। এঁদের নামে আলাদা রঙের কার্ড বানান।”

‘ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেলের’ জন্য আগামী দিনে যে রেশন কার্ডগুলি তৈরি হবে সেগুলিতে আধার কার্ডের লিঙ্ক করাতে হচ্ছে। তাই প্রত্যেক আবেদনকারীকে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ড নিয়ে সঙ্গে রাখতে হবে। আবেদনপত্রেও দুটি কার্ডের নম্বর উল্লেখ থাকছে।

তবে ডিজিটাল রেশন কার্ডে নাম সংযোজন এবং সংশোধন সহ সমগ্র প্রক্রিয়াকে যেভাবে এনআরসি’র নামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে তাতে চিন্তিত প্রশাসনিক কর্তারাও। প্রশাসনের তরফ থেকেও মানুষকে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে প্রতি রেশন গ্রাহককে আধার লিঙ্ক করতে হবে নিজ নিজ রেশন কার্ডের সাথে। তাই সকলে যাতে নির্ভুল রেশন কার্ড পান তার জন্য রাজ্য খুবই সাবধানে পা ফেলতে চাইছে। আর এ সকল সরকারি পদক্ষেপের ফলে সৃষ্টি হওয়া নানান গুজবে মানুষ আতঙ্কিত।

মুখ্যমন্ত্রীও মানুষকে অপপ্রচারে কান দিতে বারণ করেছেন। তবুও এই আতঙ্কে মানুষ যে অনেকটাই ভীত সন্ত্রস্ত তা পুজোর সময় আধার, ভোটার ও রেশন কার্ড সংশোধনের লাইন থেকেই স্পষ্ট ধারণা করা যায়। অনেকেই মনে করছেন যে একবার নির্ভুল কার্ড করিয়ে নিতে পারলে আর এনআরসি তালিকাতে নাম থাকবে। তাই জেলা থেকে শহর প্রায় সর্বত্রই পুজোর বাজার কিম্বা অনান্য কাজ ফেলে দলে দলে কার্ডের লাইনে দাড়াতে শুরু করছেন লোকজন।