“দিদিকে যাঁরা PM হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁরা আর কথা বলেন না”, দিলীপ ঘোষ

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

অমরনাথ দত্ত : সাংগঠনিক কাজে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার বীরভূমের কীর্ণাহারে এসে উপস্থিত হন। আর এখানে এসেই তিনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দ্বিচারিতার অভিযোগ আনেন। পাশাপাশি তিনি এদিন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “দিদিকে যাঁরা PM হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তাঁরা আর কথা বলেন না”।

Advertisements

Advertisements

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য রাখার সময় বর্তমান আলুর দাম বৃদ্ধি, শান্তিনিকেতন, অনুব্রত মণ্ডল এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ ওঠে। আর সেই সকল প্রসঙ্গ নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় দিলীপ ঘোষ।

Advertisements

আলুর দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে এদিন দিলীপ ঘোষ জানান, “হিমঘরে আলু রাখা, সরকারি ধান কিনে নেওয়া, সরকারকে সরাসরি না দিয়ে চাষীর কাছ থেকে মাঝখানে কিনে নেওয়া, রাইস মিলের কাছে ধান বিক্রি করে পয়সা নেওয়া, এই সমস্ত কিছু টিএমসির লোকেরা করে, দালাল যারা। সব পার্টি জানে, খাদ্যমন্ত্রী জানেনা! আর এই সিস্টেমটাকে পরিবর্তন করার কোনো চেষ্টা নেই। কারণ পুরো পার্টি এর মধ্যে যুক্ত হয়ে গেছে।”

বিজেপি নেতা জয় ব্যানার্জি দুদিন আগেই বোলপুরে এসে বলেছিলেন, স্বচ্ছ ইমেজ নিয়ে যদি অনুব্রত মণ্ডল বিজেপিতে আসতে চান তাহলে দল ভেবে দেখবে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ এদিন জানান, “আমরা দরজা অনেক বড় করেছি। অনেক নেতারাই এসেছেন, অনেকেই আসবেন। কোন বিশেষ নামের প্রয়োজন নেই। যে আসবে আমরা ভেবে দেখবো। অনেক বড় বড় নেতা, মেয়রকে আমরা নিয়েছি। এখন কে আসবেন না আসবেন সেটা ওদের ব্যাপার।”

শান্তিনিকেতন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ এদিন জানান, “সবাই জানেন টিএমসি পার্টি এখানে শান্তিনিকেতনের জমি দখল করে দুষ্কৃতিকারীদের বসিয়ে দিচ্ছে, টাকা নিয়ে ব্যবসায়ীদের বসিয়ে দিচ্ছে। যেহেতু উপাচার্য পাঁচিল দিয়ে ঘিরে সেই জমিকে রক্ষা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে। তার বাড়িতে ঢিল মারা হচ্ছে। আর শেষ পর্যন্ত এমএলএ, কাউন্সিলর মিলে দেওয়াল ভেঙে দিয়েছে। এর আগেও বহু জায়গায় রেলিং দিয়ে ঘিরে দিয়েছে, কিন্তু সেখানে তো সমস্যা হয়নি। তাহলে আজ কেন সমস্যা হচ্ছে? আসলে এরা সবাই জমির হাঙ্গর, জমি মাফিয়া। শান্তিনিকেতনের জমিতে এদের লক্ষ্য আছে। সেটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে উৎপাত করছে। জমির সুরক্ষিত করার জন্য অবশ্যই পাঁচিল হওয়া উচিত।”

পুলিশদের বিরুদ্ধেও এদিন ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, “পুলিশের ভূমিকাটা এখন পাল্টে গেছে। তারা সংবিধানের শপথ নিয়েছেন মানুষের সেবার জন্য। মানুষের পয়সায় তাদের উর্দি দেওয়া হয়, বেতন দেওয়া হয়, ভাতা দেওয়া হয়, অথচ তারা টিএমসির ক্যাডারের মত কাজ করছে। তাই পুলিশ বারবার আক্রান্ত হচ্ছে। গাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, থানা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। আর ক্ষোভ এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে কলকাতায় পুলিশরাই যেয়ে ভেঙে দিচ্ছে।”

আর এরপরেই তিনি জানান, “বিজেপি কর্মীরা লড়েছে, লড়ছে, লড়বে। চিরদিন একই রকম যায় না। লোকসভা ভোটে এত হিংসা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন তারা পরিবর্তন চাইছেন। আর সেই পরিবর্তনটা যাতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের সফলভাবে হয় তারই প্রস্তুতি শুরু করেছি আমরা।”

বীরভূমের বেশিরভাগ সিট বিজেপি জিতবে বলে এদিন বীরভূমে এসে দাবি করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “যখন আমি বলেছিলাম উনিশে হাফ, একুশে সাফ। তখন অনেকে বলেছিল বিজেপি জিরো পাবে। কিন্তু যখন রেজাল্ট বেরিয়েছিল তখন তারা ভিমরি খেয়ে গেছিলেন। দিদিকে যারা প্রাইম মিনিস্টার করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তারা এখন আর কথা বলেন না। সুতরাং বিজেপি যা বলে তা করবে। পশ্চিমবঙ্গের যত কঠিন কঠিন জায়গা আছে সেখানে ততো ভাল রেজাল্ট করবে বিজেপি। আর এই সকল কঠিন জায়গাগুলির মধ্যে এক নম্বরে আছে বীরভূম। দাঁড়িয়ে দেখবে টিএমসির লোকেরা, মানুষ ভোট দিয়ে বিজেপিকে জেতাবে।”

Advertisements